স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করে স্বামী পলাতক। প্রতীকী ছবি।
স্বামীর নিদান দিয়েছিলেন, সন্তান নেওয়া যাবে না। সে নিদান মানেননি স্ত্রী। তাই তাঁর পেটে লাথি মেরে গর্ভের সন্তানকে হত্যার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি পূর্ব বর্ধমানের কালনার ধর্মডাঙা মোড় এলাকায়। এমন ঘটনার কথা জেনে স্তম্ভিত মহিলার পরিজন থেকে প্রতিবেশীরা। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরেই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করলেন স্ত্রী চায়না বিবি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছরখানেক আগে হুগলির বলাগড় থানার আইদা গ্রামের বাসিন্দা চায়না বিবির সঙ্গে বিয়ে হয় কালনার ধর্মডাঙার যুবক কামালউদ্দিন মণ্ডলের। চায়নার অভিযোগ, বিয়ের পরেই তাঁর স্বামী তাঁকে ‘ফতোয়া’র কথা জানান। চায়নার কথায় ,‘‘স্বামীর ফতোয়া ছিল, তাঁর সঙ্গে সংসার করলেও সন্তান নেওয়া যাবে না।’’ অন্য দিকে, স্বামী সহবাস বন্ধ না করায় বিয়ের ছ’মাসের মধ্যে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। আর তাতেই চটে যান কামালউদ্দিন। গর্ভের সন্তানকে নষ্ট করে দিতে হবে বলে স্ত্রীকে নিদান দেন। এই নিদান না মানায় স্বামী ছাড়াও শ্বশুরবাড়ির আরও দুই সদস্য তাঁর উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালান বলে অভিযোগ। তবে দিনের পর দিন অত্যাচার সহ্য করেও গর্ভের সন্তানকে নষ্ট করতে চাননি তিনি। তাতেই নাকি রাগ চড়ে যায় কামালউদ্দিনের।
গত ৮ মার্চ স্ত্রীর পেটে সজোরে লাথি মেরে তার গর্ভে থাকা চার মাসের সন্তানকে তিনি ‘হত্যা’ করেন বলে অভিযোগ। পেটে অসহ্য যন্ত্রণার পাশাপাশি রক্তক্ষরণও শুরু হয় চায়নার। জ্ঞান হারান চায়না বিবি। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে কামালউদ্দিন ও তাঁর বাড়ির অন্য সদস্যেরা চায়নাকে কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করেই পালিয়ে যান। এই খবর পেয়ে চায়নার বাপের বাড়ির লোকজন কালনা হাসপাতাল ছুটে আসেন। তাঁর ভাই শেখ বাপি বলেন, ‘‘হাসপাতালের চিকিৎসকরা অনেক চেষ্টা করে আমার বোনের গর্ভে থাকা মৃত চার মাসের সন্তানকে বার করে কোনও রকম তাকে প্রাণে বাঁচিয়েছেন।’’
চায়না বিবি জানান, স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের এমন নিষ্ঠুরতা তিনি মেনে নিতে পারেননি। তাই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর রবিবার রাতেই তিনি থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন। স্বামীর দৃষ্টান্তমূলক সাস্তির দাবিও করেছেন চায়না বিবি। পুলিশ জানিয়েছে, চায়নার করা অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের সন্ধান চলছে।