ভ্লাদিমির পুতিন।
পুতিনের নাম রয়েছে এমন যে কোনও জেট বিমান কখন কোথায় রয়েছে, তা বলে দিচ্ছে ১৯ বছরের এক কিশোর! টুইটারের সাহায্যে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে সে। আর এখন তার লক্ষ লক্ষ অনুগামী তাকে অনুরোধ করেছে, রাশিয়ার অন্য সব বিমানেরও লাইভ লোকেশন অর্থাৎ কোনটি কখন কোথায় রয়েছে, তার খবর জানাতে।
১৯ বছরের ওই কিশোরের নাম জ্যাক সুইনি। ফ্লোরিডার বাসিন্দা জ্যাক শখেই বিমানের লাইভ লোকেশন খুঁজে বের করার কাজ শুরু করেছিলেন। তবে সেই কাজের দৌলতে হঠাৎই এক দিন সবাই তাঁর নাম জেনে যান। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী শিল্পপতি এলন মাস্কের ব্যক্তিগত বিমানের খোঁজ পেয়ে যান তিনি। এলনের ব্যক্তিগত জেট বিমান কখন কোথায় রয়েছে, তার বিবরণ টুইটারে পোস্ট করতে শুরু করেন। তার জন্য আলাদা একটি টুইটার অ্যাকাউন্টই খুলে ফেলেছিলেন জ্যাক। শেষে এলন নিজে যোগাযোগ করতে বাধ্য হন জ্যাকের সঙ্গে। অনুরোধ করেন, তাঁর বিমান অনুসরণ না করার। পাল্টা জ্যাক জানিয়ে দেন, এলন যদি তাঁর সংস্থার সেরা গাড়িটি উপহার হিসেবে দেন, তবেই তিনি প্রস্তাবটি ভেবে দেখতে পারে। এই ঘটনার পরই সংবাদমাধ্যমের নজরে পড়েন জ্যাক।
কিন্তু হঠাৎ তাঁর পুতিনের বিমানের তথ্য সংগ্রহ করার কথা মনে হল কেন? একটি সাক্ষাৎকারে সম্প্রতি ওই কিশোর জানিয়েছেন, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ যখন শুরু হয়নি, তখন তাঁর এক অনুগামী এই অনুরোধ করেছিলেন। জ্যাককে তিনি পুতিনের ব্যক্তিগত জেট বিমানের লাইভ লোকেশন বের করতে বলেন। তারপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তাঁর কাছে এমন একাধিক অনুরোধ আসতে শুরু করে। এর পরই জ্যাক ঠিক করেন, তিনি চেষ্টা করবেন।
জ্যাক জানিয়েছেন, বিমানের লোকেশন সংক্রান্ত তথ্য সাধারণ সরকারি তথ্য থেকেই আহরণ করা যায়। অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশের সেই হিসেব নিয়ে অঙ্ক কষে বিমানের নিখুঁত জায়গা বের করে ফেলতে পারে জ্যাকের তৈরি টুইটারবট। এই পদ্ধতিতেই তিনি এলনের বিমানের তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন। এখন পুতিনের নাম রয়েছে এমন যে কোনও বিমানের তথ্যও সংগ্রহ করতে পারেন। করছেনও। পুতিনজেট নামে একটি টুইটার অ্যাকাউন্টে সেই সব লোকেশন প্রকাশ করেন সুইনি। এ ভাবে রাশিয়ার বাণিজ্য সংস্থা ওলিগার্কের বিমানের খোঁজও পেয়েছেন সে। তবে আরও বিমানের খোঁজ পাওয়ার জন্য তাঁর মতোই আরও যারা এই ধরনের কাজ করছেন, তাঁদের সাহায্য করার অনুরোধ করেছেন জ্যাক।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে সুইনির তথ্য কোনও কাজে লাগবে কি না, তা এখনও বুঝতে পারছেন না বিশেষজ্ঞরা। তবে যুদ্ধের সময়ে যখন রাশিয়া নিজেদের বিমান সংক্রান্ত তথ্য গোপনে রাখতে চাইছে, তখন শুধু অনুগামীদের অনুরোধে সুইনির এই নিরন্তর পরিশ্রমকে বাহবাও দিয়েছেন অনেকে। টুইটারে সুইনির পুতিন জেট অ্যাকাউন্টটিও ২ লক্ষ অনুগামী জুটিয়ে ফেলেছে এরই মধ্যে।