পরিবেশন: আফগানিস্তানের সেই রেস্তরাঁয় খেতে দিচ্ছে যন্ত্রমানবী।
টেবিলে ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের প্লেটটা রেখেই সে বলে উঠল, ‘‘অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাদের।’’ অবিকল নারীকণ্ঠ, ভাষাটা দারি ফার্সি। কিন্তু ওয়েট্রেসের চেহারা দেখেই চোখ কপালে উঠল রেস্তরাঁর অতিথিদের। এ যে যন্ত্রমানবী! ফ্রেঞ্চ ফ্রাই পড়ে থাকল টেবিলেই।
অক্লান্ত ভাবে অর্ডার বয়ে আনা ওই যন্ত্রমানবীতেই ইদানীং মুগ্ধ কাবুল শহরতলির বিখ্যাত টাইমস ফাস্ট ফুড সেন্টারে খেতে আসা আফগান কিংবা ভিন্দেশিরা। ফুট পাঁচেকের এই রোবট-ওয়েট্রেসের গড়নে তেমন বিশেষত্ব নেই। শুধু মুখটা যেন হিজাবে ঢাকা! ঠান্ডা ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ে কামড় দিতে দিতেই জ়াহরা বারাকজ়াই বললেন, ‘‘যে দেশে যেমন প্রথা। হিজাব তো লাগবেই!’’ তা বলে যন্ত্রামানবীরও? পাল্টা উত্তরে আফগান তরুণী বললেন, ‘‘রেস্তরাঁয় রোবট খাবার দিয়ে যাচ্ছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে কিন্তু সেটাও একটা বড় ব্যাপার। আমরা এগোচ্ছি।’’
রেস্তরাঁর ম্যানেজার মহম্মদ রফি শিরজ়াদ জানালেন, গত মাসে ‘টিমিয়া’-কে জাপান থেকে আনা হয়েছে। আর তার পর থেকেই অন্তত সেই রোবট-ওয়েট্রেসকে চোখের দেখা দেখতে ভিড় বেড়েছে রেস্তরাঁয়। শুধু ‘ধন্যবাদ’ নয়, ইংরেজি, জাপানির পাশাপাশি আফগানিস্তানে চালু দু’টি ভাষাতে ‘হ্যাপি বার্থডে’-ও বলতে পারে সে। টিমিয়ার গায়েই রয়েছে টাচ-প্যানেল। সেখান থেকে খাবারের অর্ডার দিতে পারেন অতিথিরা। টিমিয়া সেই খাবার আনে ‘যন্ত্রের মতো।’ পথে কোনও বাধা এলে যে থেমে যেতে হবে, সেই বুদ্ধি আছে তার। যন্ত্রকে মানুষের মতো হেঁটে-চলে কাজ করতে দেখে বেজায় খুশি বছর নয়ের আহমেদ জ়াকি। রোবট দেখবে বলে সে-ই বাবাকে জোর করে টেনে এনেছে টাইমস রেস্তরাঁয়।
টিমিয়াকে নিয়ে আগ্রহ যেমন বাড়ছে, তেমনি তৈরি হয়েছে বিতর্কও। জাপানি রোবট আনিয়ে এ ভাবে আফগানদের কর্মসংস্থানে কোপ মারা হচ্ছে বলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন অনেকে।