Donald Trump Assassination Attempt

উস্কানিমূলক বক্তৃতাই দায়ী, ট্রাম্পের সভায় গুলি চলায় জো বাইডেনকে দুষছেন রিপাবলিকান সমর্থকেরা

শনিবার নির্বাচনী প্রচার সমাবেশে আততায়ীর গুলি কান ঘেঁষে বেরিয়ে যায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের। আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের উপর হামলার ঘটনায় বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকেই দায়ী করছে ট্রাম্পের দল।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৪ ১৬:৪৩
Share:

(বাঁ দিকে) জখম ডোনাল্ড ট্রাম্প। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

নির্বাচনী প্রচার সমাবেশে আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের উপর হামলার ঘটনায় বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকেই দায়ী করছে ট্রাম্পের দল। বাইডেনের উস্কানিমূলক বক্তৃতাই এমন ঘটনার জন্য দায়ী, সমাজমাধ্যমে এক পোস্টে এমনটাই দাবি করেছেন জনৈক ট্রাম্প সমর্থক।

Advertisement

যুক্তরাষ্ট্রের বিশিষ্ট মুখেরা সমাবেশের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুললেও রিপাবলিকানদের নিশানা সরাসরি বাইডেনের দিকেই। রিপাবলিকান সেনেটর জেডি ভ্যান্স তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘‘এটি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বাইডেনের নির্বাচনী প্রচারের বেশির ভাগ জুড়েই ছিল ট্রাম্পের নিন্দা। তিনি বার বার দাবি করেছেন, ট্রাম্প একজন স্বৈরাচারী তথা ফ্যাসিস্ট, তাই তাঁকে যেনতেনপ্রকারেণ ক্ষমতায় আসা থেকে আটকাতে হবে। বাইডেনের এ হেন উস্কানিমূলক কথাই আজ এই ধরনের ঘটনার দিকে নিয়ে গেছে।’’ প্রসঙ্গত, ভ্যান্স আগামী নির্বাচনে রিপাবলিকানদের তরফে ভাইস-প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হওয়ার জন্য সংক্ষিপ্ত তালিকায় রয়েছেন।

ঘটনায় ক্ষুব্ধ আর এক রিপাবলিকান নেত্রী মার্জোরি টেলর গ্রিনের দাবি, ডেমোক্র্যাটরা ট্রাম্প ও তাঁর সমর্থকদের নিকেশ করতে চান। বেনি টমসনের নেতৃত্বে হাউস ডেমোক্র্যাটরা ট্রাম্পকে আমেরিকান সিক্রেট সার্ভিস সুরক্ষার সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার জন্য একটি বিল পর্যন্ত উত্থাপন করেছিল। রবিবার এক সাক্ষাৎকারে গ্রিন জানান, ‘‘আমরা ভুলব না, আজকের কথা রিপাবলিকানরা মনে রাখবে।’’ এ ছাড়াও নিজের এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, ‘‘আজ প্রতি বিন্দু রক্তপাতের জন্য একমাত্র মিডিয়া এবং ডেমোক্র্যাটরাই দায়ী।’’

Advertisement

আমেরিকান কংগ্রেস সদস্য ও রিপাবলিকান পার্টির নেতা মাইক কলিন্সও হামলার জন্য সরাসরি বাইডেনকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। কলিন্স সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘খুনের চেষ্টায় প্ররোচনা দেওয়ার জন্য রিপাবলিকান ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির উচিত এখনই বাইডেনের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া।’’

শনিবার পেনসিলভেনিয়ার বাটলারে একটি সভায় গিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর কথা শোনার জন্য প্রচুর মানুষের জমায়েত হয়েছিল। মঞ্চে উঠে কথা বলতে শুরু করেন ট্রাম্প। তখনই পর পর তিনটি গুলির শব্দ শোনা যায়। দেখা যায়, ট্রাম্পের ডান কানের পাশ থেকে রক্ত বেরোচ্ছে। দু’হাতে কান চেপে মঞ্চেই হাঁটু গেড়ে বসে পড়েন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট। দ্রুত নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ঘেরাটোপে মঞ্চ থেকে ট্রাম্পকে সরিয়ে নিয়ে যায় সিক্রেট সার্ভিস বাহিনী। সভাস্থলে আতঙ্কে হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়। হোয়াইট হাউসের তরফে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত টমাস ম্যাথিউ ক্রুক (২০) ঘটনাস্থলেই নিহত‌ হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে সভায় উপস্থিত এক দর্শকেরও। জখম আরও দুই।

ঘটনা প্রসঙ্গে ট্রাম্প সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘আমাকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছিল। গুলি আমার কান ঘেঁষে বেরিয়ে গিয়েছে। ডান কানের উপরের দিকের চামড়া গুলিতে চিরে গিয়েছে… আমাদের দেশে যে এমনটা ঘটতে পারে, ভাবতেই পারি না।’’ দলমত নির্বিশেষে ট্রাম্পের সভায় এই হামলার ঘটনার নিন্দা করেছেন আমেরিকার রাজনৈতিক নেতারা। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘‘আমেরিকায় এই ধরনের হিংসার কোনও জায়গা নেই। আমাদের একজোট হয়ে এই হিংসার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো উচিত এবং এর নিন্দা করা উচিত।’’ হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও।

প্রসঙ্গত, এক মাস আগেই এক নির্বাচনী জনসভা থেকে ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দেন, এবার নির্বাচনে জিতলে বাইডেনের ‘গান কন্ট্রোল’ নীতিতে পরিবর্তন আনবেন। আর খোদ ট্রাম্পই পেনসিলভেনিয়ায় নিজের সমাবেশে আহত হলেন বন্দুকবাজের গুলিতে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement