যুদ্ধবিধ্বস্ত ইজ়রায়েল। ছবি রয়টার্স।
ইজ়রায়েলে গত অক্টোবরে প্যালেস্টাইনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলার পরই পাল্টে যায় গোটা দেশের ছবি। বহু ইজ়রায়েলি বন্দি হন গাজ়ায়। বন্দি অবস্থায় ইজ়রায়েলি মহিলা এবং তরুণীদের উপর যৌন নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। এমনকি, তাঁদেরকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলেও বিভিন্ন প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল। সেই সব মহিলার গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সেই অবাঞ্চিত গর্ভধারণের সম্ভবনা মোকাবিলা করার জন্য এ বার পরিকল্পনা নিচ্ছে ইজ়রায়েল সরকার। গাজ়ায় ধর্ষণের শিকার কোনও ইজ়রায়েলি মহিলা গর্ভবতী হয়ে পড়েন, তবে তাঁকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে তিনি সেই সন্তান রাখবেন কি না।
চার মাস ধরে চলছে ইজ়রায়েল এবং হামাসের মধ্যে লড়াই। হামলা-পাল্টা হামলায় জর্জরিত দুই শিবিরই। গত ৭ অক্টোবর ইজ়রায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে হামলা চালিয়েছিল হামাস গোষ্ঠী। সে সময় শতাধিক ইজ়রায়েলি নাগরিককে পণবন্দি হিসাবে গাজ়ায় নিয়ে গিয়েছিল তারা। পরে কাতারের মধ্যস্থতায় আলোচনার মাধ্যমে তাঁদের অনেককে মুক্তি দিলেও এখনও বন্দি শতাধিক। সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, বন্দি অবস্থায় অনেক মহিলা ধর্ষণের শিকার এবং অনেকেই গর্ভবতী হন।
ইতিমধ্যেই বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সরকার দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। এমনিতে ও দেশের মহিলাদের গর্ভপাত করতে পারবেন কিনা তা ঠিক করতে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি রয়েছে। কমিটিতে থাকা বিশেষজ্ঞরাই সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। গর্ভবতী মহিলারা গর্ভপাতের জন্য ওই কমিটির কাছে আবেদন করতে পারেন। তবে এই লাল ফিতের ফাঁসে যাতে বন্দি দশা থেকে মুক্তি পাওয়া গর্ভবতী মহিলারা আটকে না পড়েন, সে ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, হামাসের কবল থেকে মুক্তি পাওয়া ইজ়রায়েলি পুরুষ ও মহিলা উভয়ই বন্দি অবস্থায় যৌন নিপীড়ন বা নির্যাতিত হয়েছেন। সেই সব ইজ়রায়েলিদের শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছিল। ৫০ দিনের বেশি সময় ধরে গাজ়ায় হামাসের হাতে বন্দি থাকার পর চুক্তিমাফিক ১১০ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে কয়েক জন তরুণীর ঋতুস্রাব দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ সন্তানসম্ভবা হলেও হতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
এখনও হামাস গোষ্ঠীর কবলে বন্দি অনেকেই। ইজ়রায়েলে থাকা তাঁদের পরিবার যথেষ্ট চিন্তিত। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে তারা অনুরোধ করেছে যাতে বাকি বন্দিদের মুক্ত করার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ করার জন্য। ওই সব পরিবারদের কথায়, তাদের প্রিয়জনরা যত বেশি সময় বন্দি থাকবেন, তাঁদের গর্ভবতী হওয়ার ঝুঁকি তত বেশি হবে। এ দিকে, ইজ়রায়েলি সংবাদ মাধ্যমগুলি বিভিন্ন প্রতিবেদনে দাবি করেছে, মুক্তিপ্রাপ্ত গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে যাঁরা গর্ভপাত না করার সিদ্ধান্ত নেবেন তাঁরা সরকারের কাছ থেকে আর্থিক, আইনি সহায়তা পাবেন।