—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
এসএফআইয়ের সভায় হামলায় অভিযোগ ঘিরে বুধবার দুপুরে তেতে ওঠে কালনা কলেজ চত্বর। বাম ছাত্র সংগঠনের অভিযোগ, তৃণমূল ছাত্র পরিষদ তাদের উপরে হামলা চালিয়েছে। অভিযোগ উড়িয়ে টিএমসিপি’র পাল্টা দাবি, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করেন এসএফআই কর্মীরা।
শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা প্রশাসনের নজরে আনতে এ দিন এসএফআই জেলা কমিটি মহকুমাশাসকের (কালনা) কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ এবং স্মারকলিপি জমা দেওয়ার কর্মসূচি নিয়েছিল। ঠিক ছিল, কালনা কলেজের সামনে সভা করে সংগঠনের কর্মী, সমর্থকেরা যাবেন মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে। কর্মসূচিতে হাজির ছিলেন সংগঠনের জেলা সম্পাদক ঊষসী রায়চৌধুরী। তাঁর দাবি, ‘‘কালনা কলেজের সামনে দিয়ে মিছিল হয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত একটি সভাও হয়। সভা চলাকালীন ক্যাম্পাসের ভিতর থেকে আক্রমণ চালায় টিএমসিপি। পুলিশ ঝামেলা মেটানোর পরিবর্তে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পক্ষ নিয়ে কথা বলে। যে পদক্ষেপ পুলিশের নেওয়ার কথা ছিল, তা ওরা নেয়নি।’’
উষসী আরও বলেন, ‘‘সুশৃঙ্খল ভাবেই সভা হচ্ছিল। কলেজের ভিতরে যাওয়ার পরিকল্পনা আমাদের ছিল না। তবু আমাদের মিছিলের উপরে হামলা হয়।’’ এসএফআই জেলা সভাপতি প্রবীর ভৌমিকের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী কলেজের সামনে লাঠিসোঁটা নিয়ে তেড়ে আসে। গালিগালাজ করে। কলেজের ভিতরে ঢুকে প্রতিরোধ করতে পারতাম। তবে তা করিনি। কারণ আমাদের কর্মসূচি ছিল অন্য।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে গন্ডগোল চরমে ওঠার আগেই পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ কর্মী সমর্থকদের কলেজের ভিতরে পাঠিয়ে দেয়। এসএফআই কর্মী, সমর্থকদের মহকুমাশাসকের কার্যালয়ের দিকে চলে যেতে বলে।
মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে স্মারকলিপি দিয়ে এসএফআইয়ের দাবি, ২০১৭ থেকে কলেজগুলিতে নির্বাচন নেই। অবিলম্বে ছাত্র সংসদের নির্বাচন করতে হবে। স্কুল এবং মাদ্রাসাগুলিকে ‘কম্পোজ়িট গ্র্যান্ট’-এর অর্থ দিতে হবে। এ ছাড়া, স্কুলে বাৎসরিক ফি ২৪০ টাকার বেশি নেওয়া যাবে না, কলেজ ক্যাম্পাসে স্যানিটরি ন্যাপকিনের ভেন্ডিং মেশিন না থাকা, স্কুল ও মাদ্রাসায় পড়ুয়া অনুপাতে শিক্ষক নিয়োগ না হওয়া, স্কুল পরিচালন সমিতির নির্বাচন করার মতো বিষয়গুলিও তুলে ধরা হয়।
এসএফআই-এর জেলা সভাপতির অভিযোগ, ‘‘২০১৭ থেকে কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়নি। শাসক দলের ছাত্র সংগঠন সংসদ দখল করে রয়েছে। সংসদের টাকাও খরচ করছে। কম্পোজিট গ্র্যান্ট-এর টাকা না মেলায় স্কুলগুলির ঋণ বাড়ছে।’’ অন্য দিকে, কালনা কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা কৌশিক সাহা, দেবার্ঘ্য দস্তিদারের অভিযোগ, ‘‘এসএফআই ঝামেলা করার জন্য কলেজে আসে। কিছু দিন ধরে বহিরাগত লোকজন এনে এসএফআই ঝামেলা পাকানোর চেষ্টা করছে। তার প্রতিরোধ করি। এ দিন কর্মসূচি পালনের নামে এসএফআই উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করে। তার প্রমাণ আমাদের কাছে রয়েছে।’’