রাজনাথ সিংহ। ফাইল চিত্র
ভারতের তিনটি এলাকাকে অন্তর্ভূক্ত করে নেপালের নতুন মানচিত্রটি সংসদে পাশ করিয়ে ফেলল সে দেশের সরকার। তার চব্বিশ ঘণ্টা বাদে, আজ প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের বক্তব্য, ভারত এবং নেপাল মা কালীর বন্ধনে আবদ্ধ। রুটি-বেটির সম্পর্ক তাদের। কারও ক্ষমতা নেই তাদের বিচ্ছিন্ন করে।
অন্য একটি সূত্র অবশ্য জানাচ্ছে, মা কালী নয়, ড্রাগন বশ্যতারই সব রকম ইঙ্গিত মিলছে কাঠমান্ডু থেকে। ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে বড় রকমের চিড় ধরানোর পাশাপাশি নেপাল এ বার আমেরিকার সহায়তা ফিরিয়ে দিতেও উদ্যত। চিনের নির্দেশেই কে পি শর্মা ওলি সরকার এই পদক্ষেপের কথা ভাবছে বলে খবর।
উত্তরাখণ্ডের বিজেপি নেতা ও কর্মীদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তৃতায় রাজনাথ বলেন, “আমাদের সেনায় গোর্খা রেজিমেন্ট বারবার শৌর্য এবং বিক্রম দেখিয়েছে দেশের জন্য। তাদের যুদ্ধের ডাকই হল, জয় মহাকালী, আয়ো রে গোর্খালি। মহাকালী রয়েছেন কলকাতা, কামাখ্যা এবং বিন্ধ্যাচলে। গোটা দেশে তাঁর ভক্ত। তা হলে কী ভাবে দু’দেশের সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে?” তিনি বলেন, “ভারত-নেপাল সম্পর্ক সাধারণ নয়। আমাদের রোটি-বেটির সম্পর্ক। বিশ্বের কোনও শক্তি আমাদের বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না।” নেপালের পশুপতিনাথ মন্দিরের সঙ্গে ভারতের গভীর সংযোগের কথাও উঠে এসেছে তাঁর বক্তৃতায়। “শুধু ভৌগোলিক, ঐতিহাসিক আর সামাজিক সম্পর্কই নয়, আমাদের আধ্যাত্মিক সম্পর্কও আছে। বাবা পশুপতিনাথকে কে ভুলে যেতে পারে? অমরনাথ, সোমনাথ এবং কাশী বিশ্বনাথের থেকে তিনি কী ভাবেই বা আলাদা? আমাদের সম্পর্ক শুধু এই বিশ্বের নয়, সম্পূর্ণ পৃথক গ্রহের।’’
উত্তরাখণ্ডের লিপুলেখ পাস, কালাপানি ও লিম্পিয়াধুরাকে নিজেদের মানচিত্রে অন্তর্ভূক্ত করে পার্লামেন্টে সংবিধান সংশোধন বিল পাশ করিয়ে ফেলেছে ওলি সরকার। গোটা বিষয়টিকে ‘কিছু ভুল বোঝাবুঝি’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। বলেছেন, আলোচনার মাধ্যমে সব মিটে যাবে। তাঁর কথায়, “সম্পূর্ণ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এ কথা বলতে পারি যে কোনও ভারতীয়ের নেপালের প্রতি ঘৃণা নেই।”
তবে নেপালে জোরালো ভারত-বিরোধী হাওয়া বইছে। শুধু ক্ষমতাসীন ওলি-র কমিউনিস্ট দলই নয়, ভারতের চিরবিশ্বস্ত নেপালি কংগ্রেসও ভারতের বিরুদ্ধে জনমত তৈরিতে উঠে পড়ে লেগেছে। চিনের হাতে নেপাল যে তামাক খাচ্ছে, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। সে দেশের শক্তি ও পরিকাঠামো ক্ষেত্রে আমেরিকার একটি অনুদান (মিলেনিয়াম চ্যালেঞ্জ কোঅপারেশন)-এর প্রস্তাব ফেরানোর ভাবনা শুরু করেছে নেপাল। সূত্রের খবর, চিনের নির্দেশেই এই ভাবনা।