—প্রতীকী ছবি।
জি২০-র দিল্লি ঘোষণাপত্রে রাশিয়ার নামোল্লেখ না করে, যে কোনও দেশে একতরফা হামলা করা, ভৌগোলিক অখণ্ডতা ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টাকে নিন্দা করা হয়েছিল। তাতে সই করেছিলেন কুড়িটি রাষ্ট্রের নেতা। এ বার নিউইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের আলোচনাতেও ভারত রাশিয়ার নাম না করে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে নিজেদের পুরনো অবস্থানের পুনরাবৃত্তি করল এবং জানাল, সংলাপ এবং কূটনীতি সঙ্কট মোকাবিলার একমাত্র চাবিকাঠি। পাশাপাশি ওই সঙ্কট মোকাবিলায় রাষ্ট্রপুঞ্জের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিল।
বিদেশ মন্ত্রকের সচিব (পশ্চিম) সঞ্জয় বর্মা বলেন, “এই সময় নিজেদের দুটি প্রশ্ন করতে হবে। প্রথমত, এই সমস্যার কোনও সমাধান আমাদের কাছে কি আছে? যদি না থাকে, তা হলে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ কেন এই সংকটের মোকাবিলা করতে পারল না? রাষ্ট্রপুঞ্জের অন্যতম শক্তিশালী অঙ্গ এই নিরাপত্তা পরিষদ। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখাই এর কাজ।”
পাশাপাশি তিনি বলেছেন, ইউক্রেন সমস্যার সমাধানে মানুষের জীবননাশ হওয়া কোনও সমাধান নয়। মানবকেন্দ্রিক পদক্ষেপ, সংলাপ এবং কূটনীতির মাধ্যমেই একমাত্র সমাধান পাওয়া সম্ভব। এই যুদ্ধের জেরে অনুন্নত দেশগুলি (গ্লোবাল সাউথ) যে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ছে সে কথাও উল্লেখ করেছেন বর্মা। তাঁর কথায়, “আমরা গোড়া থেকেই বলছি, মানুষের মৃতদেহের উপর দিয়ে কোনও সমাধান তৈরি হতে পারে না। হিংসা বাড়লে তা কারও স্বার্থই সিদ্ধ করবে না। আমরা বার বার আবেদন জানাচ্ছি, হিংসা বন্ধ করতে এবং জরুরি ভিত্তিতে কূটনীতির পথে ফিরতে।”
এর আগে প্রধানমন্ত্রী মোদী রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বলেছিলেন, ‘এই সময় যুদ্ধের নয়।’ ভারতের এই অবস্থান পশ্চিমের কাছে উচ্চ প্রশংসিত হয়েছিল কিন্তু তাতে মস্কোর কৌশলে সামান্যতম পরিবর্তন আসেনি। আজ মোদীর এই মন্তব্যের পুনরাবৃত্তি করতে দেখা গিয়েছে ভারতীয় কূটনীতিককে। তাঁর বক্তব্য, “সংলাপই বিবাদমান পক্ষকে এক মঞ্চে নিয়ে আসার একমাত্র উপায়। এখন তা যতই কঠিন বলে মনে হোক না কেন। শান্তির পথে এগনোর জন্য কূটনীতির সব পথ খুলে রাখা প্রয়োজন।”
ইউক্রেন যুদ্ধের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেই ভারতের কর্তা রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্কারের দাবিকে সামনে নিয়ে এসেছেন। তাঁর কথায়, পুরনো কাঠামো পাল্টে ফেলার দরকার হয়। তা না হলে বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট হয়। যদি এই সমস্যাগুলো শুধরে নেওয়া না যায়, তাহলে প্রত্যাশা পূরণ করা যাবে না। প্রসঙ্গত, দীর্ঘ দিন ধরেই নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসেবে ভারতকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি উঠেছে। কিন্তু চিনের বিরোধিতায় তা সম্ভব হয়নি। আজ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রসঙ্গটি তুলে ধরে উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি রাষ্ট্রপুঞ্জের কাঠামোর আমূল পরিবর্তনেরও দাবি জানাল ভারত।