অ্যান্টনি ওং ইউ-মিং। —ফাইল চিত্র।
বছরটা ছিল ২০১৮। এক গণতন্ত্রপন্থী প্রার্থীর প্রচার মিছিলে দাঁড়িয়ে তাঁর সমর্থনে দু’টি গান গেয়েছিলেন হংকং-এর এক জনপ্রিয় ‘ক্যান্টোপপ’ গায়ক অ্যান্টনি ওং ইউ-মিং। সোমবার হঠাৎ ‘দুর্নীতির’ অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে। হংকং-এর দুর্নীতি দমন শাখার তরফে জানানো হয়, বছর তিনেক আগের ওই মিছিলে গান গাওয়ার ‘অপরাধেই’ নাকি এই গ্রেফতারি! যদিও গণতন্ত্রকামী এবং কূটনীতিকেরা এতে ষড়যন্ত্রের গন্ধই পাচ্ছেন।
হংকং-এর ‘কমিশন আগেনস্ট করাপশন’-এর দাবি, ২০১৮ সালে গণতন্ত্রকামী রাজনীতিক আউ নোক-হিন-এর হয়ে ওই নির্বাচনী প্রচারে গান গেয়ে আদতে দেশের আইন ভেঙেছেন অ্যান্টনি।
স্বতন্ত্র ভাবে পরিচালিত ওই সংগঠনটি জানায়, খাবার, পানীয় কিংবা বিনোদনের টোপ দিয়ে ভোট চাওয়া হংকং-এ আইনত নিষিদ্ধ। আর অ্যান্টনি তার অবমাননা করেছেন।
যাঁর প্রচার মিছিল ঘিরে এত কাণ্ড সেই গণতন্ত্রকামী প্রার্থী আউ নক-হিন-কে অবশ্য এই আইন অনুসারে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছে। আদালতে অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রায় সাত বছর পর্যন্ত কারাবাস হতে পারে আউ এবং অ্যান্টনি দু’জনেরই। যদিও বর্তমানে ২০১৯ সালে গণতন্ত্রকামী আন্দোলনে যোগ দেওয়ার অভিযোগে ১০ মাসের সাজা ভোগ করছেন আউ।
তবে এই গ্রেফতারির ঘটনা বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। হংকং-এর রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা জানাচ্ছেন, বিরোধী শক্তি অর্থাৎ গণতন্ত্রকামী আন্দোলনের কোমর ভাঙতে সম্প্রতি কোনও রকম প্রচেষ্টা বাদ রাখা হচ্ছে না সরকারের তরফে।প্রতিবাদ স্লোগান, বাচ্চাদের বই, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন—প্রশাসক বিরোধী সুরের আভাস মিললেই নিশানা করা হচ্ছে সবকিছুকেই। তার পর নির্বিচারে চলছে ধরপাকড়। এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে, নয়া জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অন্তর্গত গত এক বছরে গণতন্ত্রকামী রাজনীতিকদের সিংহভাগ ইতিমধ্যে জেলবন্দি। আর বাকি কয়েকজনকে বাধ্য করা হয়েছে দেশ ছাড়তে। ২০১৯ সালের সেই সরকার বিরোধী বিক্ষোভ আর নজরে পড়ে না।