(বাঁ দিকে) পায়েটোঙ্গটার্ন শিনাবাত্রা। নরেন্দ্র মোদী (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
পায়েটোঙ্গটার্ন শিনাবাত্রাকে সরকারি ভাবে তাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পদে রবিবার নিয়োগ করলেন সে দেশের রাজা। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী থাকসিনের কন্যা পায়েটোঙ্গটার্ন। কোটিপতি থাকসিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। সেনা অভ্যুত্থানের পর দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। এ বার সেই থাকসিনের ৩৭ বছরের কন্যা হলেন তাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী। তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি জানিয়েছেন, দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও মজবুত করার জন্য নতুন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।
গত সপ্তাহে আইন ভাঙার জন্য পূর্বতন প্রধানমন্ত্রী স্রেঠা থাভিসিনকে পদচ্যুত করেছে তাইল্যান্ডের সাংবিধানিক কোর্ট। থাভিসিন আইন ভেঙে অপরাধ মামলায় দোষী সাব্যস্তকে মন্ত্রী করেছিলেন। তাঁর অপসারণের পর আবার অস্থির হয়ে ওঠে তাইল্যান্ড। এর পরেই পায়েটোঙ্গটার্নকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করা হল। রবিবার সকালে তাঁকে সরকারি নিয়োগপত্র দিয়েছেন সে দেশের রাজা মহা বজিরালঙ্কর্ন। পায়েটোঙ্গটার্ন তাইল্যান্ডের কনিষ্ঠতম প্রধানমন্ত্রী, সিনাবাত্রা পরিবারের তৃতীয় ব্যক্তি। এর আগে তাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তাঁর বাবা থাকসিন, পিসি ইংলাক। দু’জনেই সেনা অভ্যুত্থানের কারণে প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়তে বাধ্য হন।
এ বার প্রধানমন্ত্রী হয়ে পায়েটোঙ্গটার্ন রবিবার একটি অনুষ্ঠানে প্রথমেই জানিয়ে দেন, দেশে অর্থনীতি মজবুত করাই আপাতত তাঁর লক্ষ্য। অতিমারির পর থেকে ধুঁকছে তাইল্যান্ডের অর্থনীতি। হাল ফেরাতে সাধারণ মানুষের সাহায্য চেয়েছেন পায়েটোঙ্গটার্ন। তাঁর কথায়, ‘‘সরকারের প্রধান হিসাবে আমি খোলা মনে পার্লামেন্টের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করব। দেশের উন্নয়নের জন্য সব রকম পরামর্শ স্বাগত।’’ রবিবারের ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পায়েটোঙ্গটার্নের বাবা, ৭৫ বছরের থাকসিন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘২৩ বছর আগে ও আমার পিছনে দাঁড়িয়ে ছিল। আজ আমি ওঁর পিছনে।’’
থাকসিন সরকারকে বরাবরই অপছন্দ করত সে তাইল্যান্ডের সেনাবাহিনী। রাজপরিবার ঘনিষ্ঠ দলগুলিও দূরত্ব বজায় রেখে চলত। যদিও এই আবহে একের পর এক নির্বাচন জিতেছেন এককালের টেলিকম ব্যবসায়ী থাকসিনের দল ফেউ তাই। ২০২২ সাল পর্যন্ত হোটেলের ব্যবসা সামলাতেন পায়েটোঙ্গটার্ন। গত বছর তাইল্যান্ডে সাধারণ নির্বাচনের আগে রাজনীতিতে যোগ দেন তিনি। সেই নির্বাচনে দ্বিতীয় স্থানে ছিল ফেউ তাই। প্রথম হয়েছিল মুভ ফরোয়ার্ড পার্টি। তবে সেনেটরদের বাধার কারণে তারা শেষ পর্যন্ত সরকার গড়তে পারেনি। এর পরেই থাকসিনের দলের সঙ্গে জোট করে সরকার গড়ে সেনা সমর্থিত সরকার। প্রধানমন্ত্রী হন থাভিসিন। এ বার আদালতের নির্দেশে থাভিসিনের অপসারণের পর প্রধানমন্ত্রী হলেন জোটশরিক দলের নেত্রী পায়েটোঙ্গটার্ন।