বিধাননগরের পুলিশ কমিশনারেট ১৬৩ ধারা জারি করার ঘোষণা করতেই পুলিশের ঘেরাটোপে মুড়ে ফেলা হয় যুবভারতী চত্বর। — নিজস্ব চিত্র।
সল্টলেক স্টেডিয়াম চত্বরে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার ১৬৩ ধারা (ভারতীয় ফৌজদারি কার্যবিধি ১৪৪ ধারার সমতুল) জারি করল বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট। রবিবার বিকেলে একটি সাংবাদিক বৈঠক করে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের বিধাননগর ডিসি অনীশ সরকার জানান, রবিবার বিকেল ৪টে থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ওই এলাকায় ১৬৩ ধারা জারি করা হয়েছে। স্টেডিয়ামের বাইরে রবিবার বিকেল ৫টা থেকে আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে মিছিল করার কথা ছিল ফুটবলপ্রেমীদের একাংশের। বিধাননগর পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ওই মিছিলে অশান্তির আশঙ্কা করছেন তাঁরা। কারণ গোপন সূত্রে তাঁরা জানতে পেরেছেন কিছু দুষ্কৃতী ওই শান্তিপূর্ণ মিছিলে অস্ত্র নিয়ে ঢুকে পড়তে পারে। বিশৃঙ্খলা এবং অশান্তি তৈরি করতে পারে। এ ব্যাপারে একটি প্রামাণ্য অডিয়ো রেকর্ডিংও ওই সাংবাদিক বৈঠকে শুনিয়েছে পুলিশ।
রবিবার যে অডিয়ো রেকর্ডিং দুটি প্রকাশ করে পুলিশ আশঙ্কার কথা জানিয়েছে, তাতে এক কণ্ঠস্বরকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘যত ছেলে আর মেয়ে যখন হাতে অস্ত্র নিয়ে নেবে না, তখন দেখবে পুলিশ যে বাড়াবাড়ি করছে না? সব ঠান্ডা হয়ে যাবে। পুলিশ লাঠি চালাবে, আমরা চালাব অস্ত্র। দেখি কার জোর কত?’’ অন্য একটি অডিয়োবার্তায় এক কণ্ঠস্বরকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘ওরা গ্যাস বোম ছুড়বে। আর আমরা অ্যাসিড বোম ছুড়ব। আমরা অ্যাসিড বোম নিয়ে যাব। কাদাপাড়া মোহনবাগান সমর্থকদের বলছি, তোমাদের সামনেই হবে।’’
রবিবার ছিল ডার্বি। মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গলের ডুরান্ড কাপ গ্রুপ পর্বের খেলা ছিল যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে। সন্ধ্যা ৭টা থেকে সেই খেলা শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শনিবারই ঘোষণা করা হয়, দর্শকদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ম্যাচ বাতিল করা হয়েছে। কারণ গ্যালারিতে অশান্তির আশঙ্কা করছে পুলিশ এবং স্টেডিয়ামের ৬৩ হাজার দর্শককে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য যে পরিমাণ পুলিশবাহিনী দেওয়া প্রয়োজন তা বর্তমান পরিস্থিতিতে স্টেডিয়ামে দেওয়া সম্ভব নয়। রবিবার সাংবাদিক বৈঠকেও বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের তরফে ম্যাচ বাতিল প্রসঙ্গে এই কারণের কথাই জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে পুলিশ জানিয়েছে, তাঁদের হাতে বেশ কিছু প্রমাণ এসেছে, যা থেকে তারা আশঙ্কা করছে, রবিবার যুবভারতী চত্বরে ফুটবলপ্রেমীদের মিছিলেও অশান্তি হতে পারে। তাই নিরাপত্তার স্বার্থেই এলাকায় ১৬৩ ধারা জারি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে পাঁচ জনকে আটক করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে বিধাননগর পুলিশ।