লিমার রাস্তায় মহিলাদের প্রতিবাদ মিছিল। ছবি: রয়টার্স
মন্ত্রিসভা পুনর্গঠনের পরে পেরিয়েছে সাকুল্যে তিন দিন। প্রবল বিক্ষোভের মুখে পেরুর বামপন্থী প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাস্তিলিও জানালেন, কেঁচে গণ্ডুষ করতে চলেছেন তিনি। কারও নাম না করা হলেও ঘোষণা থেকেই পরিষ্কার, সদ্য-পাওয়া কুর্সি ছাড়তে হচ্ছে গার্হস্থ্য হিংসায় অভিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী হেক্টর ভলার পিন্টোকে। তাঁর বিরুদ্ধে স্ত্রী ও মেয়েকে নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের হয়েছিল ২০১৬ সালে। তার পরেও একের পরে এক লিঙ্গ-বৈষম্যমূলক কথাবার্তা বলে শিরোনামে থেকেছেন পিন্টো। এ দিকে, প্রেসিডেন্ট হওয়ার ছ’মাসের মধ্যে পেদ্রোর এ বার চতুর্থ মন্ত্রিসভা গঠিত হতে চলেছে।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন পিন্টো। শুক্রবার ছিল তাঁর ৬৩ বছরের জন্মদিন। ওই দিনই মন্ত্রিসভা পুনর্গঠনের কথা ঘোষিত হয় একটি টেলিভিশন চ্যানেলে। এরই মধ্যে দেশ জুড়ে বিস্তর ক্ষোভ-বিক্ষোভ-প্রতিবাদ হয়েছে। উঠে এসেছে পিন্টোর অতীত। বিরোধীরা তো বটেই, দেশের তিন মন্ত্রীও তাঁর পদপ্রাপ্তির বিরোধিতা করেন। পত্রপাঠ অপসারণের দাবি আসে বিভিন্ন নারীবাদী সংগঠন ও এলজিবিটিকিউ কর্মীদের থেকে।
জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালের অক্টোবরে পিন্টোর মেয়ে, বছর উনত্রিশের ক্যাথরিন ভেলার লিমার পুলিশের দ্বারস্থ হন। অভিযোগপত্রে দাবি করা হয়েছিল, তাঁকে ও তাঁর মাকে যথেচ্ছ মারধর করেছেন পিন্টো। ২০১৭ সালে পারিবারিক আদালতের রায় পিন্টোর স্ত্রী আনা মারিয়া মানটয়ার পক্ষে যায়। মা ও মেয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পুলিশকে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। অক্টোবরে প্রয়াত হয়েছেন মারিয়া। জানা যায়, পিন্টো যে আবাসনে থাকতেন, তার লোকজনও তাঁর চেঁচামেচি আর হুমকিতে অতিষ্ঠ ছিলেন। নিস্তার পেতে তাঁকে ‘এক জায়গায় থাকার অযোগ্য’ ঘোষণা করে বহিষ্কারের জন্য সই সংগ্রহ হয়েছিল বছর কয়েক আগে।
বুধবার রাতে মন্ত্রিপরিষদের প্রথম অধিবেশনের পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় আয়োজিত সাংবাদিক বৈঠকে ছিলেন না পিন্টো। গার্হস্থ্য হিংসার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে এক মন্ত্রী বলেন, ‘‘ব্যক্তিগত বিষয় ব্যক্তিগতই থাকা ভাল।’’ সূত্রের খবর, প্রতিবাদের মুখে কংগ্রেসের স্পিকার পিন্টোকে পদত্যাগ করতে বলেছিলেন। কিন্তু তিনি রাজি হননি। গার্হস্থ্য হিংসায় দোষী সাব্যস্ত হননি বলে দাবি করেছেন পিন্টো। জানিয়েছেন, অনাস্থা প্রস্তাব পাশ না হওয়া পর্যন্ত তিনি পদেই কবেন।