বাঁদিকে লেফটেন্যান্ট জেনারেল এসএম কামরুল হাসান, ডানদিকে জেনারেল আসিম মুনির। ছবি: রয়টার্স।
পাকিস্তান সফরে গিয়ে বাংলাদেশ সেনার প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল এসএম কামরুল হাসান দ্বিপাক্ষিক সামরিক সহযোগিতা নিয়ে ‘গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা’ করেছেন বলে দু’দেশের একাধিক সাংবাদমাধ্যমের দাবি। চিনা সহযোগিতায় পাকিস্তানে নির্মিত যুদ্ধবিমান জেএফ-১৭ থান্ডার কেনার বিষয়েও দ্বিপাক্ষিক সামরিক প্রতিনিধিস্তরের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে প্রকাশিত কয়েকটি খবরে দাবি।
পাকিস্তান সফরে গিয়ে মঙ্গলবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল রওয়ালপিন্ডিতে পাক সেনাবাহিনীর সদর দফতর (জিএইচকিউ) পরিদর্শন করেন। বুধবার পাক সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির এবং জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটি (সিজেসিসি)-র চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জার সঙ্গে ইসলামাবাদে পৃথক বৈঠক হয় লেফটেন্যান্ট জেনারেল কামরুলের। পাক সরকারের বিবৃতিতে দাবি, ‘‘দুই ভ্রাতৃপ্রতিম দেশের সামরিক সহযোগিতার বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।’’
গত ৫ অগস্ট ক্ষমতার পালাবদলের পরে ঢাকার সঙ্গে সখ্য বেড়েছে ইসলামাবাদের। বাংলাদেশ সেনার অবসরপ্রাপ্ত অফিসারদের একাংশ খোলাখুলি ভারত বিরোধী মন্তব্য করে চলেছেন। এই আবহে বাংলাদেশ সেনার শীর্ষস্তরের প্রতিনিধিদের পাকিস্তান সফর ভারতকে অস্বস্তিতে ফেলবে বলেই কূটনীতি ও সামরিক বিশ্লেষকদের একাংশের মত।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের একটি অংশের দাবি, সে দেশের সেনাবাহিনীতে এখন ক্ষমতার দু’টি ভরকেন্দ্র। সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ়-জ়ামান এই দু’টি শিবিরের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে চলেন। একটি শিবিরের নেতৃত্বে রয়েছেন ‘আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ’ হিসাবে পরিচিত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মদ সাহিনুল হক এবং তাঁর বিশ্বস্ত মেজর জেনারেল মুহাম্মদ মঈন খান। অন্য শিবিরের নেতা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মহম্মদ ফইজুর রহমান। তাঁর সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বের একাংশ এবং মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের একাংশে ঘনিষ্ঠতা রয়েছে।
জেনারেল ওয়াকারের মতোই লেফটেন্যান্ট জেনারেল কামরুলও দু’গোষ্ঠীর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে চলেন। যদিও হাসিনা সরকারের পতনের পরে বাংলাদেশ সেনার গুরুত্বপূর্ণ পিসিও পদ পেয়েছেন তিনি। জেনারেল ওয়াকারের স্ত্রী শারাহনাজ কমলিকা জ়ামান বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী তথা আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনার খুড়তুতো বোন। তাঁর বাবা জেনারেল মহম্মদ মুস্তাফিজ়ুর রহমানও ছিলেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান। ১৯৯৭ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত ওই পদে ছিলেন মুস্তাফিজ়ুর। ঘটনাচক্রে, সে সময়ও প্রধানমন্ত্রী ছিলেন হাসিনা।