ফের বিপাকে ইমরান খান। ফাইল চিত্র।
বিদেশি রাষ্ট্রনেতাদের কাছ থেকে পাওয়া উপহার বেআইনি ভাবে বিক্রি করার অভিযোগে পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করল সে দেশের নির্বাচন কমিশন। শুক্রবার পাক নির্বাচন জানিয়েছে, ইমরান আইনসভা বা সরকারে কোনও পদ গ্রহণ করতে পারবেন না। পাক পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ‘ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি’ থেকে ইমরানকে বরখাস্ত করার কথাও জানিয়েছে কমিশন।
ইমরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলির শাসকদের থেকে রত্নখচিত ঘড়ি, কলম, নেকলেস-সহ নানা উপহার পেয়েছিলেন। কিন্তু সেগুলির মধ্যে অন্তত চারটি তিনি কয়েক কোটি টাকায় এক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেন। পাকিস্তানের নিয়ম অনুযায়ী বিদেশি রাষ্ট্রনেতাদের কাছ থেকে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী বা অন্য মন্ত্রীরা যা উপহার পান, তা সরকারি কোষাগারে জমা হওয়ার কথা। তবে ১০ হাজার টাকার কম মূল্যের উপহার হলে প্রধানমন্ত্রী তা নিজের কাছে রাখতে পারেন। তার বেশি মূল্যের কোনও উপহার তাঁর পছন্দ হলে তার বাজার-মূল্যের সমপরিমাণ অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা করে সেই উপহার নিজের কাছে রাখতে পারেন।
এ ক্ষেত্রে ইমরান নেকলেসের মূল্য অনেক কম দেখিয়ে মাত্র কয়েক হাজার টাকা সরকারি ভাঁড়ারে জমা দিয়ে সেটি হাতিয়ে নিয়েছিলেন। ইমরান নেকলেসটি তাঁর বিশেষ সহায়ক জুলফিকার বুখারির মাধ্যমে লাহৌরের এক গয়না বিক্রেতার কাছে বিক্রি করে দেন। উপহার বিক্রির এই অভিযোগ ‘সত্য’ বলে জানায় তদন্তকারী সংস্থা ‘ফেডেরাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি’। এর পরেই পদক্ষেপ করেছে কমিশন।
নিজের হাতে গড়া দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর অন্দরে বিদ্রোহ, পিএমএল(এন), পাকিস্তান পিপলস পার্টি, মুত্তাহিদা মজলিস-ই-আমল, মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্টের মতো বিরোধী দলগুলির নজিরবিহীন জোট এবং পাক সুপ্রিম কোর্টের ধারাবাহিক ভর্ৎসনায় বিদ্ধ ইমরান গত ১০ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। দেশজোড়া তুমুল অর্থনৈতিক সঙ্কটের জেরে সে সময় তাঁর জনসমর্থনও তলানিতে ঠেকেছিল। কিন্তু গত সপ্তাহে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির ৮ আসনের উপনির্বাচনে ৬টিতেই জয়ী হয়ে চমকপ্রদ প্রত্যাবর্তনের বার্তা দিয়েছিল ইমরানের দল। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপ প্রাক্তন পাক ক্রিকেট ক্যাপ্টেনের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ আবার অনিশ্চিত করে তুলল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকে।