ফাইল চিত্র
তাঁর মূর্তি সরানোর দাবি আগেও বহু বার উঠেছে। আর প্রতিবারই তা নাকচ করেছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। তবে এ বার অক্সফোর্ডের ওরিয়েল কলেজ থেকে সম্ভবত পাকাপাকি ভাবে সরতে চলেছে সেসিল রোডসের মূর্তি। গত কাল রাতে মূর্তি সরানোর পক্ষেই ভোট দিয়েছেন কলেজের পরিচালন সমিতির অধিকাংশ সদস্য। আমেরিকা থেকে ব্রিটেনে আছড়ে পড়া বর্ণবৈষম্য-বিরোধী আন্দোলনের প্রভাবেই এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে।
১৯১১ সালে ওরিয়েল কলেজে বসানো হয়েছিল বিশ শতকের এই রাজনীতিক ও সাম্রাজ্যবাদী শিল্পপতির মূর্তি। মৃত্যুর পরে রোডসের সম্পত্তির একটা বিশাল অঙ্ক অনুদান হিসেবে পেয়েছিল ওরিয়েল। তার আগে ১৮৯৯ সালে রোডসকে আইনে সাম্মানিক ডক্টরেট ডিগ্রি দেয় এই কলেজ। বর্ণবৈষম্যে বিশ্বাসী এই শিল্পপতির মূর্তি নিয়ে অনেক বারই আপত্তি উঠেছে। কিন্তু অনুদান বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয়ে তা খারিজ করে এসেছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। তাঁদের বক্তব্য ছিল, রোডসের নামে চলে আসা স্কলারশিপ থেকে উপকৃত হয়েছেন আফ্রিকা ও ভারতের বহু ছাত্রছাত্রী। এই স্কলারশিপ পেয়েছিলেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টনও। ২০১৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় রোডসের মূর্তি ভেঙে ফেলার পরেও ব্রিটেনে একই দাবি উঠেছিল। কিন্তু শেষমেশ থেকেই গিয়েছে মূর্তিটি।
তবে গত মাসে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পরে আমেরিকা জুড়ে যে বর্ণবিদ্বেষ-বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল, তার প্রভাব এসে পড়ে ব্রিটেনেও। ক্রীতদাস ব্যবসায় জড়িত বিভিন্ন ব্যক্তির মূর্তিতে হামলা শুরু হয়। সম্প্রতি ব্রিস্টলে ভেঙে ফেলা হয় এডওয়ার্ড কলস্টনের মূর্তি। বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে লন্ডনের মেয়র সাদিক খান তড়িঘড়ি একটি কমিশন গঠন করেন লন্ডনের বিভিন্ন রাস্তার নাম ও মূর্তি নিয়ে পর্যালোচনা করার জন্য। অনেকেই মনে করছিলেন, এর পরে আন্দোলনকারীদের নিশানায় রয়েছে লর্ড ক্লাইভের মূর্তি।
তবে এত আন্দোলনেও অবিচল থেকেছেন ওরিয়েল কলেজ কর্তৃপক্ষ। গত সপ্তাহেও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ক্রিস প্যাটেন বিরোধিতা করেছিলেন রোডসের মূর্তি সরানোর। গত কাল পরিচালন সমিতি মূর্তি সরানোর পক্ষেই সিদ্ধান্ত নেয়। গড়া হয়েছে একটি তদন্ত কমিশনও।