ইমরান খান। —ফাইল চিত্র
‘আজ়াদি মার্চ’-এর ডাক দেওয়া বিরোধী নেতাদের ‘যুক্তিসঙ্গত’ সব দাবিই মানতে রাজি পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। শুধু মানবেন না তাঁর ইস্তফার দাবিটি।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী পারভেজ খট্টাকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদলকে বিরোধীদের সঙ্গে আলোচনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন ইমরান। সেই প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকেই প্রধানমন্ত্রী এই কথা জানিয়েছেন বলে পাকিস্তানের একটি সংবাদপত্রের বক্তব্য। ইমরানের ইস্তফার দাবিতে পাক ধর্মগুরু-রাজনীতিক ফজ়লুর রহমানের দল ‘জমিয়ত উলেমা-এ-ইসলাম ফজ়ল’ (জেইউআই-এফ)-এর ‘আজ়াদি মার্চ’ চলছে গত পাঁচ দিন ধরে। ইসলামাবাদের রাস্তায় ধর্নায় বসেছেন হাজার হাজার প্রতিবাদী। তাতে মদত জোগাচ্ছে দুই প্রধান বিরোধী দল পিএমএলএন ও পিপিপি।
এই পরিস্থিতিতে বেনজির ভুট্টোর পুত্র তথা পিপিপি প্রধান বিলাবল ভুট্টো জ়ারদারি বলেছেন, যে কোনও মূল্যে তিনি সরকার গড়বেনই। গত কাল পঞ্জাব প্রদেশে দলীয় সম্মেলনে ইমরানকে ‘অকর্মণ্য প্রধানমন্ত্রী’ বলে মন্তব্য করে বিলাবল বলেন, আজ়াদি মার্চকে সমর্থন করছেন তিনি। ইমরান সরকারের কেন্দ্রীয় বাজেট সাধারণ মানুষের জীবন নরক করে দিয়েছে বলে অভিযোগ তোলার পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ, কৃষক ও ঘরছাড়াদের দুর্দশার অভিযোগও তোলেন তিনি।
গত কাল প্রতিরক্ষামন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন সরকারি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বিরোধীদের ‘রেহবার কমিটি’-র একদফা বৈঠক হয়। তার পরেও গত রাতে ফজ়লুরের বাড়িতে ফের ইমরানের বার্তা নিয়ে যান প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চৌধরি শুজাত হুসেন। বৈঠক হয় আজও।কিন্তু সমাধান-সূত্র মেলেনি। বিরোধীদের অভিযোগ, ব্যাপক রিগিং করে ক্ষমতায় এসেছেন ইমরান। তাই তাঁকে গদি ছাড়তে হবে এবং সেনার হস্তক্ষেপ ছাড়া অবাধ নির্বাচন করতে হবে। ফজ়লুর বলেন, ‘‘আমাদের ন্যূনতম দাবিই হল প্রধানমন্ত্রীর ইস্তফা। সেই দাবির বদল হবে না। আরও একটা রাস্তা রয়েছে। সেটা হল, প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে তাঁকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করা এবং আইনসভা ভেঙে দেওয়া।’’ যদিও ইস্তফার জন্য ফজ়লুরের দেওয়া ৪৮ ঘণ্টার চরমসীমা মানেননি ইমরান।
বিরোধীদের হুঁশিয়ারি, প্রয়োজনে সারা দেশ অবরুদ্ধ করে দেওয়া হবে। ফজ়লুর বলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে আমার কোনও ব্যক্তিগত সমস্যা নেই। আমরা যে দাবিটা তুলেছি, সেটা সারা দেশের দাবি।’’ সরকার পক্ষের বক্তব্য, ইমরানের ইস্তফার প্রশ্নই নেই, কারণ এই দাবি অসাংবিধানিক।