ভারতে প্রতিবাদ মিছিলে জেকব লিন্ডেনথাল। ছবি: রয়টার্স।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় মাদ্রাজ আইআইটি-র জার্মান ছাত্র জেকব লিন্ডেনথালকে ভারত ছাড়তে হয়েছে। তিনি দেশে ফিরে গিয়েছেন। কিন্তু জার্মানির বিভিন্ন শহরেই তাঁকে সঙ্গে নিয়ে মোদী সরকারের এই আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের পরিকল্পনা করেছেন প্রবাসী ভারতীয়রা।
বস্তুত, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে জার্মানির বিভিন্ন শহরে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। ভারতীয়দের মধ্যে মূলত পড়ুয়ারাই তাতে এগিয়ে এসেছেন। এঁদের মধ্যে বড়সড় সংখ্যায় রয়েছেন বাঙালিরা। দু’টি প্রতিবাদ সভা হয়েছে বার্লিনে। হয়েছে ভারতীয় দূতাবাস পর্যন্ত একটি প্রতিবাদ মিছিলও। সেই মিছিল থেকে স্লোগান উঠেছে বাংলায়। মিছিলে বাংলায় লেখা পোস্টারও দেখা গিয়েছে। উঠেছে ‘আজাদি’ স্লোগান। বার্লিনের এই প্রতিবাদে সক্রিয় অংশ নেওয়া এমবিএ-র ছাত্র ইন্দ্র মিত্র শনিবার জানান, সামনেই আরও একটি সভা আয়োজনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে গিয়ে ভারতে যে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে, তার প্রতিবাদেই এই সভা। সেখানে জেকবকে উপস্থিত করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
প্রতিবাদ হয়েছে হামবুর্গ, এরফুর্টে। হামবুর্গে শুক্রবার প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেছিলেন সেখানকার ভারতীয়রা। প্রথম সারিতে ছিলেন বঙ্গতনয়া, টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি হামবুর্গে পাঠরতা তৃষিতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেশ কিছু বাধা পেরিয়ে তবেই প্রতিবাদ সভার আয়োজন করতে পেরেছেন বলে জানালেন তৃষিতা। বললেন, ‘‘প্রথমে হামবুর্গের ভারতীয়দের ফেসবুক গ্রুপে আমরা এই প্রতিবাদের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলাম। সেই পোস্ট মুছে তো দেওয়াই হয়, আমাদেরও ওই গ্রুপ থেকে বার করে দেওয়া হয়।’’ তবে হাল ছাড়েননি তৃষিতারা। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার চালিয়েই ওই প্রতিবাদ সভা করেছেন। গোটা কর্মসূচির আয়োজনে আরও বাঙালি ছিলেন বলে জানালেন তৃষিতা। তাঁরই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পাপুল ঘোষ লিখেছেন বেশ কিছু পোস্টার। প্রতিবাদ সভায় অংশ নিয়েছিলেন কিছু ভারতীয় ছাত্র, অধ্যাপক, ইঞ্জিনিয়ারেরা। বিক্ষোভ সমাবেশে স্লোগান ওঠে ‘হম কাগজ নেহি দিখায়েঙ্গে।’ পড়া হয় ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনা। গাওয়া হয় জন লেননের ‘ইমাজিন দেয়ার ইজ নো কান্ট্রিস।’ তৃষিতা জানালেন, আরও বড় প্রতিবাদ সভার পরিকল্পনা করছেন তাঁরা।