উৎসবহীন নোত্র দাম, মন খারাপ প্যারিসের

এপ্রিলের আগুনে বিপদ আরও বাড়িয়েছিল গির্জা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা কাঠ ও লোহার খাঁচা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

প্যারিস শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:৫৪
Share:

এ বছর বড়দিনে নোত্র দাম। এপি

গত দু’শতকে এই প্রথম বড়দিনের প্রার্থনা হল না প্যারিসে বিখ্যাত নোত্র দাম গির্জায়। এপ্রিল মাসের ভয়াবহ আগুনে পুড়ে গিয়েছে ৮৫৫ বছরের পুরনো এই গির্জা। আজ, উৎসবের দিনে ক্যাথিড্রালের রেকটর প্যাট্রিক শোভের আক্ষেপ, ‘‘আমাদের নোত্র দামকে সম্পূর্ণ বাঁচানো যাবে কি! সম্ভাবনা মাত্র ৫০ শতাংশ!’’

Advertisement

ফরাসি বিপ্লবের পরে এই প্রথম বড়দিনের উপাসনা হল না নোত্র দামে। মন খারাপ প্যারিসবাসীরও। অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সে কথা লিখেছেন। এমনই এক স্থানীয় বাসিন্দা জঁ-লুক বোদাম বললেন সে দিনের কথা— ‘‘মা ফোন করে জানাল নোত্র দামে আগুন লেগেছে। মনে আছে, আমি বলেছিলাম হতেই পারে না। বাইক নিয়ে ছুটে যাই। পৌঁছে ওই আগুন দেখে কেঁদে ফেলেছিলাম।’’ আরও বললেন, ‘‘আমরা ফরাসি। আমরা আবার নোত্র দামকে পুনর্নির্মাণ করবই, ঠিক যেমন আগে ছিল। ফ্রান্সের প্রতীক নোত্র দাম।’’

এপ্রিলের আগুনে বিপদ আরও বাড়িয়েছিল গির্জা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা কাঠ ও লোহার খাঁচা। অগ্নিকাণ্ডের ঠিক আগে নোত্র দাম সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছিল। তার জন্য ওই অস্থায়ী কাঠামো তৈরি করা হয়েছিল। সেগুলো থেকে গথিক সৌধের বেশ কিছু দুর্মূল্য অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রেকটর প্যাট্রিক শোভে বলেন, ২০২১ সালের আগে হয়তো ঠিক মতো সংস্কার কাজই শুরু করা সম্ভব হবে না। বললেন, ‘‘বুকের ভিতরে চিনচিন করছে, এ বার বড়দিনের উৎসব হল না।’’ আগেই জানিয়েছিলেন, নোত্র দামের ‘আত্মাকে বাঁচিয়ে রাখতে’ ক্রিসমাস উপলক্ষে প্রার্থনার আয়োজন করেছেন তাঁরা। নোত্র দামের এক মাইলের মধ্যে অন্য একটি গথিক গির্জায় সেই প্রার্থনা হয়েছে। নোত্র দামের আদলেই উপাসনার মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল। সেখানেই প্রার্থনা শেষে সংবাদমাধ্যমকে শোভে বললেন, ‘‘বিপদ কাটেনি এখনও। ওই কাঠ ও লোহার খাঁচাগুলোর এখনও বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। যে কোনও সময়ে ভেঙে পড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে বড় বিপদ হতে পারে।’’

Advertisement

১২ শতকের গির্জাটির সংস্কার কাজের জন্য পঞ্চাশ হাজার টিউব ‘ক্রিসক্রস’ করে লাগানো হয়েছিল। শোভে জানিয়েছেন, ওই টিউবগুলো সম্পূর্ণ সরানো গেলে তবেই বিপদ কাটবে। তার পরে সংস্কার কাজ শুরু করা যাবে। তাঁর কথায়, ‘‘২০২১ সালকে লক্ষ্য রেখে তার মধ্যে সমস্ত টিউব সরাতে হবে। তার পরে গির্জার ভিতরের হাল ভাল করে খতিয়ে দেখতে হবে। কতগুলো পাথর সরাতে হবে, কতগুলো পাথর বদলে অন্য পাথর আনতে হবে।’’ তার পরেও নোত্র দামে সাধারণ মানুষকে ঢোকার অনুমতি দিতে আরও তিন বছর লাগবে বলে অনুমান শোভের। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ-র আশা, ২০২৪ সালের মধ্যে সংস্কার কাজ শেষ করবেন তাঁরা। ওই বছর অলিম্পিক্সের আসর বসবে ফ্রান্সে। যদিও ওই সময়সীমা আদৌ বাস্তবায়িত করা সম্ভব কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বিশেষজ্ঞদের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement