গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পূর্ণ কৃতিত্ব ছাত্রদেরই দিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস। ছাত্রদের সঙ্গে বৈঠকের পরে একটি সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘ছাত্র আন্দোলনের জন্যই যে হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।’’ পরে ইউনূস ওই সাংবাদিক বৈঠকেই হাসিনাকে ‘দানবী’ বলেও অভিহিত করেন বলে জানিয়েছে ভারতের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম।
রবিবার রাতে বাংলাদেশের আন্দোলনকারী ছাত্রদের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন ইউনূস। পরে একটি সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি জানান, ছাত্রদের সঙ্গে তাঁর কী কী কথাবার্তা হয়েছে। ইউনূস বলেন, ‘‘আমি ছাত্রদের বলেছি, আপনাদের সম্মান করি। আপনাদের ভূমিকায় আমি মুগ্ধ। আপনারা যা করেছেন, তা তুলনাহীন। আর আপনারা আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন বলেই এই দায়িত্ব আমি গ্রহণ করেছি।’’ এর পরেই ইউনূস বলেন, ‘‘অবশেষে সেই কাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত এসেছে। দানবী বিদায় নিয়েছে দেশ থেকে।’’
উল্লেখ্য, হাসিনার সরকার বিরুদ্ধে দীর্ঘ দিন ধরেই স্বৈরাচারের অভিযোগ তুলছে বাংলাদেশের বিরোধীরা। এই হাসিনাই শান্তির নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ইউনূসকে বন্দি করেছিলেন। বাংলাদেশকে গর্বিত করেও দেশে থাকতে পারেননি ইউনূস। অবশেষে বাংলাদেশের মসনদ থেকে হাসিনা সরকারের পতনের পরে তাঁকে দেশে ফিরে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার দাবি তোলেন ছাত্র আন্দোলনকারীরা। সেই দাবি মেনে গত সপ্তাহের শেষেই অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেন ইউনূস। তার পরেই বৈঠক করেন ছাত্র আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে। পরে সাংবাদিক বৈঠকে ইউনূস বার্তা দেন তাঁর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সদস্যদেরও। যে সরকারে ছাত্র আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিরাও রয়েছেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের সদস্যদের সতর্ক করে ইউনূস বলেছেন, ‘‘দেশ শাসনের পথ কখনওই সহজ হবে না। বহু মানুষকে সঙ্গে নিয়ে চলতে হবে। বৃহত্তর স্বার্থে কিছু গুরুত্বপূর্ণ এবং সমস্যা সঙ্কুল সিদ্ধান্তও নিতে হবে। যে মুহূর্তে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া শুরু করবেন, সেই মুহূর্ত থেকেই সমস্যা শুরু হবে। কারও সিদ্ধান্ত পছন্দ হবে। কারও হবে না। কিন্তু থামলে চলবে না।’’