বয়ঃসন্ধিকালে দাড়ি গজানোর সময় প্রায় সমস্ত কিশোরই বিব্রত বোধ করে। খুব কম জনই এটাকে ফ্যাশনের পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে।
মিনেসোটার এমজে জনসনের ক্ষেত্রে কিন্তু ঘটেছে ঠিক উল্টো ঘটনা। দাড়িই তাঁর পরিচয় হয়ে উঠেছে। তাঁর বাইসনের শিঙের মতো উপরের দিকে বাঁকানো বিশালাকার দাড়ি দূর থেকেও সহজে নজরে পড়ে যায়।
১১ বছর বয়সে প্রথম যখন তাঁর মুখে দাড়ির রেখা দেখা যায়, তখন থেকেই এর প্রতি একটা ভালবাসা তৈরি হয় জনসনের।
প্রথম প্রথম তিনি এটাকে মজার পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি যখন দাড়ি বাড়াতে শুরু করেছিলেন তাঁকে দেখে সকলেই হাসাহাসি করতেন।
সেই মজার ভাগ নিতেন জনসনও। নিজেই জানিয়েছেন, কখনও আবার দাড়ি দিয়ে বান্ধবীদের প্রভাবিত করারও চেষ্টা করতেন। ছোটদের ছিল তাঁর দাড়ি নিয়ে প্রচুর কৌতূহল।
তখনও জনসন ভাবেননি তিনি কোনও দিন ‘দাড়ি মানব’ বলে পরিচিত হবেন। দাড়ি দিয়েই নিজের পরিচয় গড়ে তোলার কথা তখন কল্পনাতেও ছিল না তাঁর।
সালটা ছিল ২০০৯। ইন্টারনেটে নানান বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করছিলেন তিনি। তখন হঠাৎ করেই তাঁর চোখ পড়ে যায় দাড়ি প্রতিযোগিতার বিষয়টি।
রংবেরঙের, নানা আকার এবং দৈর্ঘ্যের সে সব দাড়ি প্রভাবিত করে জনসনকে। দাড়ির প্রতি ভালবাসা তো ছিলই, এ বার সেই ভালবাসাকেই আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যান তিনি।
এখন জনসনের যে দাড়ি আমরা দেখি তা বানানো শুরু হয়েছিল সেই ২০০৯ সাল থেকেই।
১২ বছরের এই দাড়ি দেখে অনেকে গোঁফ বলেও ভুল করতে পারেন। কারণ সরাসরি গোঁফের সঙ্গেই যোগ রয়েছে তাঁর দাড়ির। আর থুতনিতে দাড়ির জায়গা পুরোপুরি ফাঁকা।
তাঁর দাড়ির দৈর্ঘ্য দেড় ফুট! যে কেউ সেটিকে বাঁকানো শিং বলেও ভুল করতে পারেন।
তিনি ২০২০ সালে আমেরিকায় অনুষ্ঠিত দাড়ি প্রতিযোগিতায় ‘ম্যান উইথ বেস্ট বিয়ার্ড’-এর খেতাব পেযেছেন। এই প্রতিযোগিতায় মূলত তিনটি বিষয় বিচার করে থাকেন বিচারকেরা। প্রথমত দাড়ির দৈর্ঘ্য, দ্বিতীয় দাড়ির স্টাইল এবং তৃতীয় স্টেজ পারফরম্যান্স।
তার উপর ১৬ রকমের (ছোট, লম্বা, ফ্রি স্টাইল ইত্যাদি) দাড়ির ক্যাটেগরি রয়েছে এই প্রতিযোগিতায়। তার মধ্যে যে কোনও একটি ক্যাটেগরি প্রতিযোগীকে বেছে নিতে হবে।
এমন অদ্ভুত দাড়ি দেখে তাঁর স্ত্রী কী বলেন? জনসন জানান, স্ত্রী এবং সন্তানের অনুপ্রেরণা এবং ভালবাসা ছাড়া এটা সম্ভব হত না।
প্রতি সপ্তাহে স্ত্রীর দামি হেয়ার কন্ডিশনার দাড়িতে লাগান তিনি। এ নিয়ে স্ত্রীর কোনও অভিযোগ নেই। বরং স্ত্রী তাঁর দাড়ি পছন্দ করেন।
যেখানেই যান জনসনের দাড়ি দেখার জন্য সকলেই কাছে চলে আসেন। দাড়ি ছুঁয়ে দেখতে চান। এ রকম দাড়ি কী ভাবে করা সম্ভব সে সব টিপসও নেন।
প্রচুর পুরস্কার পেয়েছেন জনসন। প্রচুর দাড়ি প্রযোগিতায় বিচারক হয়েও গিয়েছেন। যা তাঁর কাছে খুবই গর্বের।
দাড়ি কমিউনিটির এক জন হতে পেরে দারুণ খুশি জনসন। কারণ তিনি মনে করেন, এই কমিউনিটির প্রতিটা মানুষ খুব খোলামেলা মনের। ভাল বন্ধুদের সঙ্গে অত্যন্ত ভাল সময় কাটাতে পারেন।