কিম বলেন, ‘‘দেশে জীবন-মরণ লড়াই চলছে। তাই ২০২২-এ উত্তর কোরিয়ার মূল লক্ষ্য হবে আর্থিক উন্নয়ন।’’ ফাইল ছবি
একেই বলে ঠেলার নাম বাবাজি! দেশের মানুষ খাবারের অভাবে হাহাকার করছেন। তাই বাধ্য হয়ে নতুন বছরের শপথে সুর বদলালেন উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। পরমাণু অস্ত্রের বদলে খাদ্য উৎপাদন এবং জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে জোর দেওয়ার কথা বললেন তিনি।
কোরিয়ার ওয়ারকার্স পার্টি-র অষ্টম সেন্ট্রাল কমিটি প্লেনারি বৈঠক শেষ হয়েছে শুক্রবার। সমাপ্তি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন কিম জং উন। সেখানেই তিনি দেশের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বলেন, ‘‘দেশে জীবন-মরণ লড়াই চলছে। তাই ২০২২-এ উত্তর কোরিয়ার মূল লক্ষ্য হবে আর্থিক উন্নয়ন।’’
এ বছর তাঁর প্রেসিডেন্ট পদে দায়িত্ব নেওয়ার ১০ বছর পূর্ণ হয়েছে। ২০১১ সালে তাঁর বাবা প্রয়াত হওয়ার পর তিনি ওই পদে বসেন।
কয়েক দিন আগেও কিম নতুন বছরে একাধিক নীতিগত পরির্বতনের কথা ঘোষণা করেছিলেন। দক্ষিণ কোরিয়া এবং আমেরিকার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার উপরও জোর দিয়েছেন। তবে এ বার সরাসরি দলের বৈঠকে তাঁর আর্থিক উন্নয়নের প্রসঙ্গ তোলা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করেছে ওয়াকিবহাল মহল।
কিন্তু কেন এমন সুর বদল? করোনা মহামারির শুরু থেকেই দেশে অভ্যন্তরীণ লকডাউন জারি করে কিম সরকার। ফলে বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় উত্তর কোরিয়ার। ভেঙে পড়ে অর্থনীতি। তারই রেশ ধরে দেশে চূড়ান্ত খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমেও এ খবর প্রকাশিত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সংকট কাটিয়ে উঠতে পরমাণু অস্ত্র নিয়ে আলোচনা বন্ধ রেখে কিম আর্থিক উন্নয়ন এবং জনগণের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের দিকে জোর দিতে চাইছেন।
দলীয় বৈঠকে কিম তাঁর বক্তৃতার সিংহভাগ ব্যয় করেছেন গ্রামীণ উন্নয়ন, মানুষের খাদ্যাভ্যাস ও স্কুল শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার উপর। ‘অসমাজতান্ত্রিক অভ্যাস’গুলির পরিবর্তনের উপর জোর দিয়েছেন তিনি। তিনি জানিয়েছেন, পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মাধ্যমে উন্নয়নের কাজ চলবে।