ফাইল চিত্র।
আরও এক বার মুখোমুখি জো বাইডেন ও ভ্লাদিমির পুতিন। চলতি মাসে এ নিয়ে দু’বার ভার্চুয়াল আলোচনায় বসলেন আমেরিকা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। আর আগের বারের মতো এ বারও ইউক্রেন সীমান্তে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে পুতিনকে নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন বাইডেন।
গত কাল মস্কোর সময়ে গভীর রাতে শুরু হয় এই অনলাইন বৈঠক। হোয়াইট হাউস সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রায় পঞ্চাশ মিনিট ধরে চলে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের কথা। ওয়েলমিংটনে নিজের বাড়ি থেকেই কাল ভিডিয়ো কনফারেন্স সেরেছেন বাইডেন। যেখানে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট কার্যত হুঁশিয়ারির সুরে রুশ প্রেসিডেন্টকে জানিয়েছেন, অবিলম্বে ইউক্রেন সীমান্ত থেকে তাঁরা বাহিনী না সরালে পুতিন-ঘনিষ্ঠ বেশ কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে বাধ্য হবে আমেরিকান প্রশাসন এবং তা হবে ২০১৪ সালের থেকেও অনেক বেশি কড়া। সেই সময়ে ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছিল তৎকালীন ওবামা প্রশাসন।
পাল্টা বাইডেনের থেকেও প্রতিশ্রুতি চেয়ে রেখেছেন পুতিন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হোয়াইট হাউসের আধিকারিক জানাচ্ছেন, ইউক্রেন যাতে কোনও দিন নেটোর সদস্য হতে না পারে, আমেরিকার থেকে তার প্রতিশ্রুতি চেয়েছেন পুতিন। সেই সঙ্গে নেটো বাহিনীর সমরাস্ত্র যাতে কোনও ভাবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহার না করা হয়, তার উপরেও জোর দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। বাইডেন অবশ্য আগেই আশ্বাস দিয়েছিলেন, নেটো বাহিনীকে কোনও ভাবেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে কাজে লাগানো হচ্ছে না।
চলতি বছরের গোড়া থেকেই তাদের সীমান্তে রাশিয়া প্রায় এক লক্ষ সেনা মোতায়েন করে রেখেছে বলে অভিযোগ ইউক্রেনের। আর কয়েক মাসের মধ্যে রাশিয়া গোটা ইউক্রেন অধিগ্রহণ করে নিতে পারে বলে আশঙ্কা কিভের। কালকের এই ভার্চুয়াল বৈঠকের আগে কূটনৈতিক পথে এই সমস্যা সমাধানের বার্তা দিয়েছিলেন বাইডেন। রাশিয়া তার পাল্টা হিসেবে জানিয়েছিল চলতি সপ্তাহে তারা ইউক্রেন সীমান্ত থেকে দশ হাজারের মতো সেনা সরিয়েও নিয়েছে। কিন্তু তাতে পরিস্থিতির খুব বেশি হেরফের হবে না বলে মনে করছে বাইডেন প্রশাসন।
ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে আগামী ১০ জানুয়ারি জেনিভায় কূটনৈতিক স্তরে ফের আলোচনায় বসবে রাশিয়া ও আমেরিকা। তবে পুতিন বা বাইডেন উপস্থিত থাকবেন না তাতে। আমেরিকার উপ বিদেশসচিব ওয়েন্ডি শেরম্যান এবং রাশিয়ার উপ বিদেশমন্ত্রী সের্গে রায়াবকভ বৈঠকের নেতৃত্ব দেবেন। গত বুধবার আমেরিকার বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ফোনে কথা বলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সঙ্গে। হোয়াইট হাউসের সূত্র জানাচ্ছে, শুধু দ্বিপাক্ষিক আলোচনাই নয়, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানির মতো দেশের সঙ্গেও ইউক্রেন সীমান্তের জটিলতা নিয়ে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে আমেরিকান প্রশাসন। ওয়াশিংটনের অনুরোধ না মানলে মস্কোর বিরুদ্ধে কী কী ধরনের নিষেধাজ্ঞা চাপানো হতে পারে, তা নিয়েও মিত্র পক্ষকে জানিয়ে রাখা হয়েছে।
মস্কোর তরফে সংবাদমাধ্যমে জানানো হয়েছে, পুতিন গত কাল উদ্বেগের বিষয়গুলি কার্যত তালিকা করে আমেরিকান প্রেসিডেন্টের কাছে তুলে ধরেছেন। একই কাজ করেছেন বাইডেনও। তবে ওয়াশিংটন তাদের উদ্বেগের বিষয়গুলি এখনই প্রকাশ্যে আনতে চাইছে না বলে জানানো হচ্ছে।