Afghanistan

Afghanistan: বাধা অনেক, তবু কাবুলের পথে মহিলারা

লিখে আনা বিবৃতি জোরে জোরে পড়ে শোনাচ্ছিলেন লায়লা বাসম। প্রকাশ্যে তালিবদের বলছিলেন, ‘‘বন্ধ করো এই খুনখারাপির কারখানা।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

কাবুল শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২২ ০৬:১৭
Share:

কাবুলের রাস্তায় মেয়েদের সেই মিছিল। ছবি: রয়টার্স

সাকুল্যে তিরিশ জন মহিলা! তাঁদের পায়ের চাপেই কেঁপে উঠল আফগানিস্তানের রাজধানী শহরের মাটি। কাবুলের একটি মসজিদের সামনে জড়ো হয়ে শুরু করেছিলেন মিছিল। তাঁদের অভিযোগ, রহস্যজনক ভাবে তরুণদের খুন হয়ে যাওয়া নিয়ে। বিশেষ করে, যাঁরা আগের সেনার সঙ্গে কোনও না কোনও ভাবে জড়িত ছিলেন। স্লোগানে-স্লোগানে মহিলারা বিচারের দাবি ছড়িয়ে দিচ্ছিলেন বাতাসে। মাত্র কয়েকশো মিটার! তার পরেই পথ রুখে দিল সশস্ত্র তালিবান।

Advertisement

গত মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের কয়েক জন প্রতিনিধির সামনেই ঘটেছে এমনটা। অভিযোগ, তালিব যোদ্ধারা বেশ কয়েক জন সাংবাদিক ও চিত্র সাংবাদিককে আটক করে। ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে ছবি মুছে ফেরত দেওয়া হয়। যদিও, পথ রুদ্ধ হলেও কণ্ঠ ছেড়েছিলেন প্রতিবাদী ওই মহিলারা। লিখে আনা বিবৃতি জোরে জোরে পড়ে শোনাচ্ছিলেন লায়লা বাসম। প্রকাশ্যে তালিবদের বলছিলেন, ‘‘বন্ধ করো এই খুনখারাপির কারখানা।’’

অগস্টে কাবুল দখল করার পরেই শুনতে-ভাল বেশ কিছু কথা বলেছিল তালিবান। শুরুতে সরকারে আফগান মহিলাদের অংশগ্রহণ করতে আহ্বান জানানো হয়। বলা হয়, এ বার থেকে বিরোধীদের ক্ষমা করার রাস্তাতেই হাঁটবে তারা। সময় যত গড়িয়েছে, কাজের বেলায় মুখের কথার থেকে বহু যোজন দূরে সরে গিয়েছে তালিবান। সামনে আসছে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রচুর খবর।

Advertisement

ক্ষমতা দখলের পরেই বিনা-অনুমতিতে বিক্ষোভ করায় নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে তালিবান। কার্যক্ষেত্রেও ধর্মের দোহাই দিয়ে কঠোর ভাবে দমন করছে প্রতিবাদ। রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং দু’টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনের আলাদা-আলাদা প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, তালিবান ক্ষমতা দখলের পরে এ পর্যন্ত একশোরও বেশি বিচার-বহির্ভূত হত্যার ভিত্তিপূর্ণ অভিযোগ রয়েছে। তার সপ্তাহ কয়েক পরেই কাবুলে মহিলাদের এই বিক্ষোভ।

মিছিলটির আয়োজন করা হয়েছিল সমাজমাধ্যম ব্যবহার করে। পড়ে শোনানো বিবৃতিতে বলা হয়, তালিবান অগস্টে দেওয়া কথার খেলাপ করে প্রাক্তন সেনা আর আগের শাসকের সঙ্গে যুক্ত লোকজনকে খাঁড়ার মুখে রেখেছে।

মিছিলে শামিল নায়েরা কোয়াহিস্তানি বলছিলেন, ‘‘আমি পৃথিবীকে বলতে চাই, তালিবানকে বলুন এই হত্যা বন্ধ করতে। আমরা মুক্তি চাই। আমরা বিচার চাই। চাই মানবাধিকার।’’ তাঁরা গলা তুলেছেন তালিব-যাঁতাকলে মহিলাদের নিপীড়ন নিয়েও। কিছু দিন আগেই সরকারি ফতোয়া এসেছে, নিকটাত্মীয় কোনও পুরুষ-সহচর না থাকলে মেয়েরা বেশি দূর পর্যন্ত যেতে পারবে না। নায়েরার কথায়, ‘‘মেয়েদের অধিকার মানবাধিকারই। আমাদের অধিকার নিজেদেরই রক্ষা করতে হবে।’’

সমাজমাধ্যমে সামনে আসা কিছু ভিডিয়ো ফুটেজ় থেকে মঙ্গলবার রাজধানীর অন্য কোনও প্রান্তে মহিলাদের আরও একটি বিক্ষোভের কথা জানা গিয়েছে। মেয়েদের শিক্ষা ও কাজের সুযোগ ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি তোলা হয় সেখানে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement