Reason Behind Intermittent Fasting's Popularity

ভারতীয়েরা উপোস করতে ব্যস্ত কেন! ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং নিয়ে কী বলছেন অম্বানীদের প্রশিক্ষক?

অভিনয়জগতে ওজন কমানো এবং ফিটনেসের প্রসঙ্গ উঠলেই দেখা যাচ্ছে, তারকারা সবাই ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’ করছেন। অর্থাৎ খাবার সময়কে নির্দিষ্ট কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বেঁধে রেখে দিনের বাকি দীর্ঘ সময়টা কাটাচ্ছেন উপোস করে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:০৪
Share:

ছবি : শাটারস্টক।

সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ ছবিতে মগজধোলাইয়ের মন্ত্র ছিল— অনাহারে নাহি খেদ, বেশি খেলে বাড়ে মেদ! দেখা যাচ্ছে, ভারতীয়েরা সেই ভাবনাতেই বিশ্বাসী। নাগার্জুন থেকে শুরু করে ক্যাটরিনা কইফ হয়ে রাম কপূর কিংবা রাম-শ্যাম-যদু-মধু— সকলেই উপোস করতে ব্যস্ত।

Advertisement

অভিনয়জগতে ওজন কমানো এবং ফিটনেসের প্রসঙ্গ উঠলেই দেখা যাচ্ছে, তারকারা সবাই ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’ করছেন। অর্থাৎ খাবার সময়কে নির্দিষ্ট কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বেঁধে রেখে দিনের বাকি দীর্ঘ সময়টা কাটাচ্ছেন উপোস করে। ওজন কমানোর এ ছাড়া আর অন্য উপায় নেই তা নয়। কিন্তু সেই সব উপায় না বেছে ভারতীয়রা উপোস করতে ব্যস্ত কেন! ওজন ঝরানোর জন্য কি ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’-ই বেশি কার্যকর? বলিউডের তারকাদের ফিটনেস প্রশিক্ষক বিনোদ চান্না ওই পছন্দের কয়েকটি নেপথ্য কারণ জানিয়েছেন। নিজের ব্লগে তিনি এ-ও লিখেছেন যে, ‘‘উপোস করার অভ্যাস বা চল, যা-ই বলুন, তা কিন্তু আমাদের ভারতের ধর্মীয় সংস্কৃতিতে বহু দিন ধরেই রয়েছে।’’

উপোসের সংস্কৃতি

Advertisement

উপোস ভারতের বিভিন্ন ধর্মের এবং সম্প্রদায়ের মানুষ নানা ভাবে নানা কারণে পালন করেন। কেউ শিবরাত্রির ব্রত করেন, কেউ রাখেন রোজা। সেই সব উপোসের নিয়মও কিছুটা ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের মতোই বলে মনে করেন বিনোদ। তিনি বলছেন, ‘‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং-এর যে মূল ভাবনা তার সঙ্গে ভারতীয়দের উপোসের অভ্যাসের অনেক মিল রয়েছে।’’ সেই তত্ত্ব কিছুটা ঠিকও। রোজা যিনি রাখেন, তিনি একটি নির্দিষ্ট সময়ে যা খাওয়ার খেয়ে নিয়ে সারা দিন উপোস থেকে আবার সূর্য ডোবার পরে খান। আবার কেউ ঘুম থেকে উঠে কিছুই না খেয়ে সন্ধ্যায় বা রাতে পুজো দেওয়ার পরে আবার খাবার খান। শিবরাত্রিতে টানা দু’দিনও উপোস করেন কেউ কেউ।

কোথায় মিল?

বিনোদ বলছেন, ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়েও কেউ ১৬ ঘণ্টা না খেয়ে থাকেন। কেউ ২০ ঘণ্টা উপোস দেন। আবার ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ে টানা ২৪ ঘণ্টাও না খেয়ে থাকার নিয়ম আছে। সপ্তাহে দু’দিন পর্যন্ত সেই নিয়ম পালন করা যায়। তাই চানার মতে, ‘‘উপোস করার জন্য তাই ভারতীয়দের ভাবতে হয় না বিশেষ। তাদের কাছে বিষয়টা সংস্কৃতিজনিত কারণেই কঠিন নয়।’’ তবে শুধু সেটুকুই নয়। বিনোদ বলছেন ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং জনপ্রিয় হওয়ার নেপথ্যে আরও কিছু কারণ।

আর কী কী কারণ?

১। সহজ পন্থা: যে কোনও সমস্যার সমাধানে সহজ পথটিই বেছে নেওয়ার প্রবণতা থাকে বেশি। ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের বিষয়টি শুনে অনেকেরই মনে হয় ওই নিয়ম মেনে চলতে অসুবিধা হবে না।

২। ক্যালোরিতে নিয়ন্ত্রণ: খাবার খেয়ে ক্যালোরি নিয়ন্ত্রণের থেকে সব সময়েই খাবার না খেয়ে ক্যালোরি নিয়ন্ত্রণ করা সহজ। সেটিও কারণ হতে পারে বলে বিনোদের মত।

৩। উপোস করলে মেদ ঝরে: অনেকেই বিশ্বাস করেন উপোস করে থাকলে শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী শক্তি সরবরাহ করতে দেহে জমে থাকা অতিরিক্ত মেদ ঝরে যাবে। সেই বিশ্বাস থেকেও ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং জনপ্রিয় হয়ে থাকতে পারে।

সচেতন হওয়া দরকার

বিনোদ বলছেন, ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করলে তা সঠিক নিয়ম মেনে করা উচিত। তা না করলে শরীরে পুষ্টির অভাব দেখা দিতে পারে। যিনি উপোস করছেন, তিনি অসুস্থও হয়ে পড়তে পারেন। এমনকি, মনমেজাজও বিগ়ড়ে যেতে পারে নিয়ম না মেনে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করলে। তা ছাড়া শরীরে কিছু কিছু রোগ থাকলেও খাওয়াদাওয়ার সময়ের দিকে নজর দিতে হয়। তাই তাঁদেরও চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করা উচিত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement