এস জয়শঙ্কর। —ফাইল চিত্র।
ইজ়রায়েল-হামাস যুদ্ধে ভারত যে ভারসাম্যের কূটনীতিতেই বিশ্বাসী, এই সঙ্কেত আন্তর্জাতিক শিবিরকে দিতে তৎপর দিল্লি। হামাসের ইজ়রায়েলের উপরে আক্রমণের ঘটনাকে ‘বড় মাপের সন্ত্রাসবাদী পদক্ষেপ’ হিসেবে বর্ণনা করে একই নিঃশ্বাসে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর প্যালেস্টাইনের মানুষের সমস্যার সমাধানের কথাও বলেছেন গত কাল গভীর রাতে রোমে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে।
কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, সম্প্রতি ইজ়রায়েল-হামাসের মধ্যে চলতি সংঘাতে যুদ্ধবিরতি চেয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জে জর্ডনের আনা প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটিতে গরহাজির থাকার পরে ভারত আরব বিশ্বের উষ্মার কারণ হয়ে উঠেছে। নরেন্দ্র মোদী সরকারের এই ইজ়রায়েল-ঘেঁষা অবস্থান নিয়ে চর্চা শুরু হয় দেশ-বিদেশে। শাসক দল বিজেপির সমালোচনায় সরব হয়েছে কংগ্রেস-সহ অন্য বিরোধী দলগুলি। তার পর থেকেই ভারতের অবস্থানের ব্যাখ্যা দিয়ে চলেছেন বিদেশমন্ত্রী।
জয়শঙ্করের কথায়, “৭ অক্টোবর যেটা হয়েছিল সেটা বড় মাপের সন্ত্রাসবাদ। গোটা অঞ্চলকে যা ভিন্ন অভিমুখে ঠেলে দেয়। তবে অবশ্যই সবাই আশা করছেন, একটা সময়ের পরে সবাই বুঝবেন যা ঘটছে তা অঞ্চলের পক্ষে অশুভ। সহযোগিতার মাধ্যমে কিছুটা স্থিতি আসবে।” তাঁর কথায়, “সন্ত্রাসবাদ আমরা মেনে নিতে পারি না। তার বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতেই হবে। আবার প্যালেস্টাইনের দিকটিও রয়েছে। সে দেশের মানুষের
সমস্যার সমাধান করতেই হবে। আমাদের মত হল, দ্বিদেশীয় সমাধান করতে হবে। সেটা আলোচনা ও সংলাপের মাধ্যমেই করতে হবে। সন্ত্রাসবাদ ও সংঘাতের মাধ্যমে নয়।
মানবিক আইন বলবৎ হওয়া প্রয়োজন। এই ধরনের জটিল পরিস্থিতিতে ভারসাম্যের অভাব থাকাটা ঠিক নয়।”
কূটনৈতিক শিবিরের মতে, ভারত চিরকালই প্যালেস্টাইন প্রশ্নে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্য দেশগুলির তুলনায় বেশি ‘নরম’। ইজ়রায়েল এবং প্যালেস্টাইন— এই দুই রাষ্ট্রের স্বীকৃতি এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পক্ষেই অতীতে বারবার সওয়াল করেছে ভারত। সোমবার একটি নিবন্ধে কংগ্রেসের প্রাক্তন সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী ভারতের সেই ধারাবাহিক কূটনৈতিক অবস্থানের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ করেছিলেন। বিজেপি শিবিরের অবশ্য দাবি, কূটনৈতিক ধারাবাহিকতা বজায় রেখেই পদক্ষেপ করছে সরকার।