Israel-Hamas Conflict

‘হানিয়া হত্যার বদলা নিতে ইজ়রায়েলে সামরিক প্রত্যাঘাত’, খোমেইনির নির্দেশে সক্রিয় ইরান সেনা

ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আমি খোমেইনির ওই ‘বার্তা’ পেয়েই বুধবার রাতে বৈঠক করেছে সে দেশের জাতীয় সামরিক পরিষদ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০২৪ ১০:৫২
Share:

(বাঁ দিক থেকে) বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, ইসমাইল হানিয়া এবং আয়াতোল্লা আলি খোমেইনি। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

স্বাধীনতাপন্থী প্যালেস্টাইনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়ার খুনের বদলা নিতে ইজ়রায়েলের বিরুদ্ধে ‘সরাসরি সামরিক প্রত্যাঘাতে’র নির্দেশ দিলেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আমি খোমেইনি। তাঁর ওই ‘বার্তা’ পেয়েই বুধবার রাতে বৈঠক করেছে ইরানের জাতীয় সামরিক পরিষদ। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিম এশিয়ার যুদ্ধ পরিস্থিতি আরও সঙ্কটজনক হয়ে উঠতে পারে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার তেহরানে নিহত হানিয়ার শেষকৃত্য হয়েছে।

Advertisement

এর আগে গত এপ্রিলে সিরিয়ার মাটিতে বিমান হামলায় ইরানের দুই শীর্ষ সামরিক কমান্ডার নিহত হওয়ার পর জাতীয় সামরিক পরিষদের একই ধরনের বৈঠক ডাকা হয়েছিল। অন্য দিকে, ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি ইরাকের রাজধানী বাগদাদের অদূরে আমেরিকার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইরানের ‘ইসলামিক রেভলিউশনারি গার্ড কোর’-এর ওই কমান্ডার কাসিম সোলেমানি নিহত হওয়ার পর ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধেও সর্বাত্মক সামরিক হামলার নির্দেশ দিয়েছিলেন খোমেইনি।

প্রসঙ্গত, ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজ়েশকিয়ানের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মঙ্গলবার সে দেশের রাজধানী তেহরানে হাজির ছিলেন হানিয়া। হামাস প্রধান হানিয়া ছাড়াও তেহরানের ওই অনুষ্ঠানে ‘আমন্ত্রিত’ হিসাবে হাজির ছিলেন, প্যালেস্টাইনি সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদের প্রধান জিয়াদ আল-নখালাহ। লেবাননের শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজ়বুল্লার ‘ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল’ নইম কাশেম এবং ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মুখপাত্র মহাম্মদ আবদুলসালাম!

Advertisement

ভারত সরকারের তরফে ওই অনুষ্ঠানে ছিলেন নরেন্দ্র মোদী সরকারের মন্ত্রী নিতিন গডকড়ীও। অন্যান্য আমন্ত্রিত বিদেশি রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে একই মঞ্চে দেখা গিয়েছিল হানিয়াকে। ঘটনাচক্রে, ওই অনুষ্ঠানের কয়েক ঘণ্টা পরেই তেহরানের এক সরকারি অতিথিশালায় খুন হন হামাস প্রধান হানিয়া। ইজ়রায়েলের গুপ্তচর সংস্থা ‘মোসাদ’-এর বিরুদ্ধে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। ইজ়রায়েলকে নিশানা করে ইরানের ইরানের বিদেশ দফতরের মুখপাত্র নাসের খানানি বুধবার বলেন, ‘‘প্যালেস্টাইনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়ার রক্ত কখনওই বৃথা যাবে না। প্রতিরোধের লড়াইয়ে ইরান-প্যালেস্টাইন বন্ধন এর ফলে আরও দৃঢ় হবে।’’

কাতারের মধ্যস্থতায় গাজ়ায় যুদ্ধবিরতির জন্য ইজ়রায়েলের সঙ্গে বৈঠকে হামাসের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন হানিয়া। কাতারের রাজধানী দোহা থেকেই পেজ়েশকিয়ানের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তিনি তেহরানে গিয়েছিলেন বলে খবর। অতীতে হানিয়ার পরিবারের একাধিক সদস্যকে হত্যার অভিযোগ উঠেছিল ইজ়রায়েল সেনার বিরুদ্ধে। চলতি বছরের জুন মাসেই উত্তর গাজার আল-শাতি শরণার্থী শিবিরের পাশে হানিয়ার পরিবারের বাড়িতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল তারা। সেই হামলায় হানিয়ার পরিবারের ১০ সদস্যের মৃত্যু হয়েছিল। চলতি বছরের এপ্রিলে ইজ়রায়েলি সেনার হামলায় তাঁর তিন পুত্রের মৃত্যু হয়েছিল। তার আগে হানিয়ার ভাই এবং ভাইপোও গাজ়ায় ইজ়রায়েলি হামলার বলি হয়েছিলেন। তবে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার এখনও হানিয়া হত্যার দায় স্বীকার করেনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement