জগদীপ ধনখড়। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যসভার অধিবেশনেই অধ্যক্ষ জগদীপ ধনখড়ের মুখে শোনা গেল আরএসএস (রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ)-এর ‘অপ্রতিরোধ্য গ্রহণযোগ্যতা’র কথা! বুধবার এ সংক্রান্ত একটি বিতর্কে তিনি বলেন, ‘‘দেশের উন্নয়ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের সাংবিধানিক অধিকার আরএসএসের রয়েছে।’’
নিট ও ইউজিসি-নেট পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে অস্বস্তির মুখে নরেন্দ্র মোদী সরকার ওই সব পরীক্ষার আয়োজক সংস্থা ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ)-র ডিজি সুবোধকুমার সিংহকে পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে। কিন্তু এনটিএ-র চেয়ারম্যান প্রদীপকুমার জোশী এখনও কেন নিজের পদে বহাল, তা নিয়ে সংসদে সরব হয়েছে বিরোধীরা। বুধবার সমাজবাদী পার্টি (এসপি)-র সাংসদ রামজীলাল সুমনের এক মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ওই কথা বলেন ধনখড়। দেশের উপরাষ্ট্রপতির মতে, ‘‘আরএসএস নিঃস্বার্থভাবে জাতিকে সেবা করার জন্য গভীর ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সংগঠন।’’
‘আরএসএস ঘনিষ্ঠ’ হিসাবে পরিচিত প্রদীপকুমার এনটিএ-র চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার আগে ইউপিএসসি-র চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করেছেন। তার আগে ছত্তীসগঢ় ও মধ্যপ্রদেশে বিজেপি সরকারের আমলে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান পদে ছিলেন। সে সময়ও তাঁর যোগ্যতা, তাঁর জন্য আরএসএসের সুপারিশ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল।
আরএসএস নিয়ে মোদী সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ নিয়েও সংসদে সরব হয়েছে বিরোধীরা। ১৯৬৬ সালের সরকারি নির্দেশিকা বদল করে গত ৯ জুলাই কেন্দ্রীয় কর্মিবর্গ এবং প্রশিক্ষণ দফতর একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল। তাতে সমস্ত স্তরের সরকারি কর্মচারী এবং আধিকারিকদের আরএসএসের কর্মসূচিতে যোগদানের ছাড়পত্র দেওয়া হয়। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে খোলাখুলি সঙ্ঘের খোলাখুলি অনুপ্রবেশ ঘটবে বলে অভিযোগ তুলেছে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’। অন্য দিকে, বিজেপির তরফে মোদী সরকারের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানানো হয়েছে।
১৯৬৬ সালে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সরকার আরএসএস এবং জামাতে ইসলামির কর্মসূচিতে যোগদানের ক্ষেত্রে ওই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। ১৯৮০ সালে তার মেয়াদ বাড়ানো হয়। বিজেপির দাবি, ছ’দশক আগেকার ওই নিষেধাজ্ঞা অসাংবিধানিক ছিল। ১৯২৫ সালে কেশব বলিরাম হেডগেওয়ার প্রতিষ্ঠিত হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আরএসএস অতীতে তিন বার সার্বিক ভাবেও নিষেধাজ্ঞার কবলেও পড়েছে। প্রথম বার নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছিল ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি মহাত্মা গান্ধীহত্যার পরে। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার বল্লভভাই পটেল আরএসএস-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে অনেক নেতাকে কারারুদ্ধ করেছিলেন সে সময়।