ইরানের হিজাব বিরোধী আন্দোলনের একটি খণ্ডচিত্র। ফাইল চিত্র।
গাড়ির ভিতরেও মেয়েদের হিজাব পরা বাধ্যতামূলক হতে চলেছে ইরানে। সংবাদ সংস্থা এএফপির তরফে এমনই দাবি করা হয়েছে। সংবাদ সংস্থার তরফে জানা গিয়েছে, ইরানের গোঁড়া এবং রক্ষণশীল প্রশাসন শুধু প্রকাশ্য কোনও স্থানেই নয়, গাড়ির ভিতরেও মেয়েদের নিয়ম মেনে হিজাব পরাকে সুনিশ্চিত করতে চাইছে। যদিও সরকারি ভাবে এখনও এই বক্তব্যের সমর্থনে সরকার বা প্রশাসনের কেউ মুখ খোলেননি।
সরকারের উপরমহলের তরফে মুখ না খোলা হলেও ইরানের স্থানীয় একটি সংবাদ সংস্থাকে সে দেশের এক উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, তাদের তরফে ‘নজর-১’ নামের একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এই উদ্যোগে দেশের নানা প্রান্তে নজরদারি বাড়ানো হবে। গাড়ির ভিতরে কেউ হিজাব না পরলে, প্রথমে ফোনে বার্তা পাঠিয়ে তাঁকে সতর্ক করা হবে। তারপরেও হিজাব না পরলে, আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এএফপির সূত্র অনুযায়ী, ইরানের পুলিশের তরফে ইতিমধ্যেই দেশবাসীর উদ্দেশে এই বলে বার্তা দেওয়া হয়েছে যে, দেশের সমাজ এবং সংস্কৃতি সম্মান জানিয়ে গাড়ির ভিতরেও মেয়েদের হিজাব পরা উচিত।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের কুর্দ অঞ্চলের বাসিন্দা, ২২ বছরের তরুণী মাহশা আমিনিকে গাড়ির ভিতর ‘ঠিক ভাবে’ হিজাব না পরার অপরাধেই আটক করে সে দেশের নীতি পুলিশ। পুলিশি হেফাজতেই রহস্যজনক ভাবে মাহশার মৃত্যু হয়। তার পরই তেহরান-সহ ইরানের বিভিন্ন শহর এবং শহরাঞ্চলে হিজাব খুলে, চুল কেটে রক্ষণশীল ইসলামিক শাসনের বিরুদ্ধে সরব হন সে দেশের মেয়েরা। হিজাব-বিরোধী এই প্রতিবাদ আন্দোলনের প্রথম সারিতে দেখা গিয়েছিল সে দেশের অনেক শিল্পী, গায়ক, অভিনেতা এবং ছাত্র-যুব সমাজের বড় একটি অংশকে। বস্তুত গত আড়াই মাস ধরেই হিজাব-বিরোধী আন্দোলনে উত্তাল রয়েছে ইরান। আন্দোলনের মুখে মাঝে সাময়িক ভাবে নমনীয়তার বার্তা দিলেও, রক্ষণশীলতার প্রশ্নে যে তারা আপস করতে রাজি নয়, তা আরও এক বার বুঝিয়ে দিল ইরানের প্রশাসন।