পারস্য উপসাগরে ইরানি বাহিনীর হাতে আটক জাহাজ। ছবি সংগৃহীত।
ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা হওয়ার পরেই ইরান জানাল, হরমুজ় প্রণালীতে তাদের হাতে আটক জাহাজে থাকা ভারতীয়দের সঙ্গে নয়াদিল্লির প্রতিনিধিদের দেখা করতে দেওয়া হবে। ওই জাহাজে ২৫ জন কর্মীর মধ্যে ১৭ জনই ভারতীয়। জাহাজটি ইরানের হাতে আটক হওয়ার পর থেকেই তেহরানের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে নয়াদিল্লি।
রবিবার রাতে ইরানের বিদেশমন্ত্রী আমির আবদোল্লাহিয়াঁর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন জয়শঙ্কর। পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়। আটক জাহাজে থাকা ভারতীয়দের মুক্তির বিষয়েও ইরানের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জয়শঙ্কর। এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে তিনি লিখেছেন, ‘‘ইরানের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে আমার ফোনে কথা হল। এমএসসি এরিস জাহাজে বন্দি আমাদের ১৭ জন কর্মীর মুক্তি নিয়ে আমরা কথা বললাম। পশ্চিম এশিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করলাম। আমি ওঁকে বলেছি, আক্রমণ থেকে বিরত থাকা, শান্তি বজায় রাখা এবং কূটনীতির আশ্রয় নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আমরা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার বিষয়ে সহমত হয়েছি।’’
এর পরেই সোমবার ইরানের বিদেশমন্ত্রী জানান, তাঁরা বন্দিদের সঙ্গে ভারতের সরকারি প্রতিনিধিদের দেখা করতে দেবেন। মালবাহী জাহাজটিকে আরব আমিরশাহি উপকূলে পারস্য উপসাগরের হরমুজ় প্রণালীতে আটক করেছিল ইরান। ইজ়রায়েলের সঙ্গে ওই জাহাজের সম্পর্ক থাকতে পারে, এই সন্দেহে সেটিকে আটক করা হয়। দেখা যায়, জাহাজের কর্মীদের অধিকাংশই ভারতীয়। তেহরানের বক্তব্য, নিজের দেশের প্রতিরক্ষার স্বার্থে তারা জাহাজটিকে আটক করেছে। উপযুক্ত তদন্তের আগে জাহাজ এবং তার বন্দিদের ছাড়া সম্ভব নয়। জাহাজটি সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে তেহরান।
ইরানের হাতে আটক জাহাজটির পরিচালনার দায়িত্বে ছিল ইটালীয়-সুইস সংস্থা এমএসসি। তারা জানিয়েছে, হেলিকপ্টারে এসে ওই জাহাজে ওঠেন ইরানের প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। সংবাদ সংস্থা এপি সূত্রে খবর, জাহাজটি আদতে লন্ডনের জোডিয়াক গোষ্ঠীর। জোডিয়াক গোষ্ঠী হল ইজ়রায়েলি ধনকুবের ইয়াল অফারের। সেই কারণেই এই জাহাজের সঙ্গে ইজ়রায়েলের যোগসূত্র খুঁজছে তেহরান। শুক্রবার দুবাই থেকে জাহাজটি মুম্বইয়ের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। শনিবার হরমুজ় প্রণালীতে সেই জাহাজটি বাজেয়াপ্ত করে ইরানের বিশেষ বাহিনী।
ইরান এবং ইজ়রায়েলের সম্পর্কের নতুন করে অবনতি হয়েছে রবিবার। প্রায় ২০০ ড্রোন দিয়ে ইজ়রায়েলে হামলা চালিয়েছে ইরান। গত ১ এপ্রিল দামাস্কাসের ইরানি দূতাবাসে ইজ়রায়েলের বোমা হামলার পাল্টা হিসাবে এই আক্রমণ। তবে সেই হামলার দায় এখনও স্বীকার করেনি ইজ়রায়েল। ইরানের ড্রোন হামলা অবশ্য ইজ়রায়েলে বড় কোনও অভিঘাত তৈরি করতে পারেনি। ড্রোনগুলির অধিকাংশই আকাশপথে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জে সমালোচিত হয়েছে ইরানের এই পদক্ষেপ।