(বাঁ দিকে) ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই। আমেরিকার সদ্যনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
আমেরিকা নিয়ে সুর কি নরম করল ইরান? সে দেশের সদ্যনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যার ছক কষার অভিযোগ অস্বীকার করার পাশাপাশি দুই দেশের সম্পর্ক মজবুত করার ডাক দিলেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী। তিনি এ-ও দাবি করলেন, ট্রাম্পের খুনের ছক কষার অভিযোগে ধৃত ব্যক্তির বাস্তবে কোনও ‘অস্তিত্ব নেই’। মনে করা হচ্ছে, আমেরিকার সঙ্গে দূরত্ব এখন কমানোর চেষ্টা করছে মাসুদ পেজ়েশকিয়ানের প্রশাসন।
আমেরিকা দাবি করে, ট্রাম্পকে হত্যার ছক কষেছিল ইরান। এই ঘটনায় ফারহাদ শাকেরি নামে এক ইরানিকে গ্রেফতার করার দাবিও তোলে তারা। আমেরিকার পুলিশের দাবি, ধৃত ব্যক্তি জেরায় স্বীকার করেছেন যে, গত ৭ অক্টোবর ট্রাম্পের উপর হামলার ছক কষা হয়েছিল। আর এই অভিযোগ উঠেছে ইরানের রেভোলিউশনারি গার্ড (আইআরজিসি)-এর বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগই খারিজ করেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি। তিনি এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেন, ‘‘একটা দৃশ্য তৈরি করা হয়েছে। এক জন খুনি, যার কি না বাস্তবে অস্তিত্বই নেই, তাকে এনে নিম্নমানের কমেডি তৈরি করছেন চিত্রনাট্যকারেরা।’’
এর পরেই আরাকচি দুই দেশের সম্পর্ক মসৃণ করার কথা বলেছেন এবং এ-ও জানিয়েছেন, পারস্পরিক শ্রদ্ধার মাধ্যমেই তা হওয়া সম্ভব। এক্সে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমেরিকার নাগরিকেরা নিজেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ইরান তাঁদের সেই পছন্দের প্রেসিডেন্ট বেছে নেওয়ার অধিকারকে সম্মান করে। সামনের পথও বাছাই করতে হবে, যা পারস্পরিক সম্মানের মাধ্যমে শুরু করা সম্ভব।’’ এর পরেই আরাকচি জানিয়ে দেন, শুধু পারমাণবিক অস্ত্রের জন্য পড়ে নেই ইরান। প্রসঙ্গত, ইজ়রায়েল-ইরান সংঘাতের সময় ইজ়রায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন ট্রাম্প। তিনি সরাসরি কটাক্ষ করেছিলেন ইরানকে। ইরানের পরমাণু কেন্দ্রে হামলার পরামর্শও দিয়েছিলেন। মনে করা হচ্ছে, এই প্রসঙ্গই উঠে এসেছে আরাকচির পোস্টে। ট্রাম্পকে ভয় পেয়ে কি ঢোক গিলছে ইরান? প্রশ্ন উঠেছে নানা মহলে। আর সে কারণেই কি আরাকচি লিখেছেন, ‘‘পরমাণু অস্ত্রের জন্য পড়ে নেই ইরান। নিরাপত্তার কথা ভেবেই এই নীতি (পরমাণু তৈরির) নেওয়া হয়েছে। উভয় পক্ষেরই এ বার পরস্পরের ভরসা অর্জন করতে হবে। এটা একতরফা হতে পারে না।’’
আমেরিকার প্রশাসনের তরফে একটি বিবৃতি জারি করে বলা হয়, শাকেরিকে জেরা করে জানা গিয়েছে যে, ট্রাম্পের উপর প্রাণঘাতী হামলা করার জন্য তাঁকে সময় বেঁধে দিয়েছিল ইরানের রেভোলিউশনারি গার্ড (আইআরজিসি)। কিন্তু আইআরজিসির বেঁধে দেওয়া সেই সময়ে ট্রাম্পের উপর হামলা চালাতে রাজি ছিলেন না শাকেরি। হামলার দিন হিসাবে আইআরজিসি ৭ অক্টোবরকে বেছেছিল বলেও ওই বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে।