ইরানের বিদেশমন্ত্রী হোসেন আমির আবদোল্লাহিয়ান। ছবি: এএফপি।
ইরানে পাকিস্তানের হামলা নিয়ে যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়ে গিয়েছে দক্ষিণ এশিয়ায়। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে ‘বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মি’। এর মাঝে ইরানও যুদ্ধের মেজাজে। তারা পাক কূটনীতিককে তলব করেছে। হামলার কৈফিয়ত চাওয়া হয়েছে পাকিস্তানের কাছে।
ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার। সে দিন পাকিস্তানের বালুচিস্তানে জঙ্গি সংগঠন জইশ আল অদলের ঘাঁটিতে মারাত্মক ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা চালায় ইরান। তেহরান জানায়, হামলার লক্ষ্য ছিল জঙ্গি সংগঠন জইশ অল অদল বা ‘আর্মি অফ জাস্টিস’-এর ঘাঁটি। ইরানের দাবি, এই জঙ্গি সংগঠন তাদের মাটিতে বেশ কয়েকটি হামলা চালিয়েছে। কিন্তু ইরানের হামলার পরপরই গর্জে ওঠে ইসলামাবাদ। তারা বৃহস্পতিবার ইরানের উপর পাল্টা হামলা চালায়।
ইরান জানিয়েছে, পাকিস্তানের হামলায় তাদের অন্তত ন’জনের মৃত্যু হয়েছে। ইরানের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র নাসের কানানি বৃহস্পতিবার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘‘সিসতান বালুচিস্তান প্রদেশে পাকিস্তানের হামলা প্রসঙ্গে কিছু ক্ষণ আগে পাকিস্তানের বরিষ্ঠ কূটনীতিককে বিদেশ মন্ত্রকে তলব করা হয়েছে। তাঁর কাছ থেকে কৈফিয়ত চাওয়া হয়েছে।’’
পাকিস্তানের তদারকি প্রধানমন্ত্রী আনওয়ার-উল-হক কাকর বর্তমানে সুইৎজ়ারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্ব অর্থনীতি ফোরামে গিয়েছেন। ইরানের সঙ্গে সংঘর্ষের আবহে তিনি তাঁর সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরছেন।
উল্লেখযোগ্য, যে সিসস্তান-বালুচিস্তান প্রদেশে পাকিস্তান বৃহস্পতিবার হামলা চালিয়েছে, ২০০০ সাল থেকে সেখানে সক্রিয় রয়েছে বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মি। বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মি একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন যা দীর্ঘ দিন ধরে পৃথক বালুচিস্তানের দাবিতে লড়ছে। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মি একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘‘পাকিস্তানকে এই হামলার মূল্য চোকাতে হবে। বালোচ লিবারেশন আর্মি চুপ থাকবে না। আমরা এর প্রতিশোধ নেব, শেষ দেখে ছাড়ব। আমরা পাকিস্তানে বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করছি।” এই আবহে ইরানও যে পাক হামলাকে ভাল চোখে দেখছে না, তা তাদের বিদেশ মন্ত্রকের অবস্থানেই স্পষ্ট।