মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
বইমেলায় নিজের দেড়শোটি বই প্রকাশ করতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী বছরের মধ্যে সেই লক্ষ্য পূরণ করতে পারবেন, বৃহস্পতিবার বইমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠান থেকে তেমনটাই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বছর তাঁর ক’টি বই প্রকাশিত হয়েছে, দেড়শোর গণ্ডি ছুঁতে আর ক’টি বই বাকি, তা-ও জানিয়েছেন।
বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান থেকে মমতা জানান, আগামী বছরের মধ্যে তিনি নিজের ১৫০টি বইয়ের গণ্ডি ছুঁয়ে ফেলবেন। ভাষণ দেওয়ার সময়ে মঞ্চে উপস্থিত তাঁর সহকারীদের কাছ থেকে জানতে চান, আগের বার পর্যন্ত বইমেলায় তাঁর মোট প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা কত। জেনে বলেন, ‘‘আগের বার ১৩৬টা বই ছিল। এ বার ১৪৩টা হয়েছে। পরের বার আর সাতটা করে দেব, ১৫০ হয়ে যাবে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর এই হিসাব অনুযায়ী, এ বছরও তাঁর সাতটি বই বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে।
মমতা এ-ও জানিয়েছেন, তাঁর লেখা বই প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৯৫ সালে। সেই সময় থেকেই তিনি বইমেলা এবং বই প্রকাশের সঙ্গে যুক্ত আছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টে নাগাদ ৪৭তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠান শুরু হয় সেন্ট্রাল পার্কের বইমেলা প্রাঙ্গণে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বিভিন্ন বইয়ের স্টল ঘুরে দেখেন। বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলেন। বইমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে ছিলেন ব্রিটিশ হাই কমিশনার অ্যালেক্স ইলিস সিএমজি, ব্রিটিশ কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার ডিরেক্টর অ্যালিসন ব্যারেট এমবিই এবং সাহিত্যিক বাণী বসু। তাঁকে রমাপ্রসাদ গোয়েঙ্কা সিইএসসি সৃষ্টি সম্মান প্রদান করা হয়েছে।
বইমেলায় এ বারের থিম ব্রিটেন। এই নিয়ে চতুর্থ বার ব্রিটেনের থিমে কলকাতা বইমেলার আয়োজন করা হল। বইমেলা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মমতা তাঁর লন্ডনযাত্রার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। বলেন, ‘‘আমি লন্ডনের প্রতিটি রাস্তা চিনি। ওখানে গিয়ে আমি কখনও গাড়িতে ঘুরি না। পায়ে হেঁটে ঘুরি। লন্ডন আমাদেরও শহর।’’ ব্রিটিশ ভারতে ইংরেজদের উন্নয়নমূলক কাজ এবং তাঁদের তৈরি উৎকৃষ্ট স্থাপত্য, ভাস্কর্যের প্রশংসাও করেন মমতা।
এ বছর বইমেলায় ২০টি দেশ অংশগ্রহণ করেছে। তাঁদের প্রতিনিধিরাও উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। আমেরিকা, ফ্রান্স, বাংলাদেশ, জার্মানি, ইটালি, স্পেন, রাশিয়া, তাইল্যান্ড, পেরু, আর্জেন্টিনা, কলম্বিয়া, মেক্সিকো, কিউবার মতো দেশের নাম উল্লেখ করে তাঁদের প্রতিনিধিদের অভিনন্দন জানান মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতা বইমেলাকে ‘বিশ্বমেলা’ বলে অভিহিত করেন।
বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সূচনা হয় রাজ্যসঙ্গীত গেয়ে। আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বইমেলা চলবে। থিমের দেশকে সামনে রেখে ১৯ জানুয়ারি বইমেলায় ‘ব্রিটেন ডে’ পালিত হবে। এ ছাড়াও বিভিন্ন দিনে বিশেষ অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা রয়েছে। ২০ জানুয়ারি বইমেলায় পালিত হবে ‘বাংলাদেশ দিবস’। বইমেলা প্রাঙ্গণে শিশুদের জন্য উদ্যাপিত হবে ২১ জানুয়ারি দিনটি। ওই দিনের নাম দেওয়া হয়েছে ‘শিশু দিবস’। শিশুদের জন্য বিশেষ অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা থাকবে সে দিন। আগামী ২৪ জানুয়ারি প্রবীণ নাগরিকদের জন্য বিশেষ দিন। বইমেলায় ওই দিন পালিত হবে ‘সিনিয়র সিটিজ়েন ডে’।