ইজ়রায়েলি ড্রোন হামলা ইরানে। ছবি: এক্স হ্যান্ডল থেকে নেওয়া।
ক্ষেপণাস্ত্র নয়, শুক্রবার ভোরে ইসফাহান এলাকায় ইজ়রায়েলি সেনা ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করল ইরান। সে দেশের সরকারি সংবাদ সংস্থা ফারস। সেনা সূত্র উদ্ধৃত করে প্রকাশিত খবরে দাবি করা হয়েছে, ইরান ফৌজের ‘এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম’ সফল ভাবে সেই ড্রোন হানা প্রতিরোধ করেছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এখনও হামলার বিষয়ে কোনও বিবৃতি দেয়নি ইজ়রায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার।
আমেরিকার সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ় জানিয়েছিল, শুক্রবার ভোরে তারা ইরানের ‘নির্দিষ্ট’ লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। সেখানে একটি বিমানবন্দরেও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার নিশানা হয়েছে বলে প্রকাশিত খবরে দাবি করা হয়। যদিও ইরানের সরকারি সংবাদ সংস্থার দাবি, শুক্রবার ভোরে ইস্পাহানের আকাশে তিনটি ড্রোন দেখা যায়। সঙ্গে সঙ্গে আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সক্রিয় করে ড্রোনগুলি আকাশেই ধ্বংস করা হয়। ড্রোন হামলায় নয়, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় কিছু ত্রুটির কারণেই ইসফাহান বিমানবন্দরে বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে ওই খবরে দাবি।
ঘটনাচক্রে, ইসফাহান এলাকাতেই রয়েছে নাতাঞ্জ-সহ ইরানের কয়েকটি পরমাণু গবেষণা এবং ইউরেনিয়াম পরিশোধন কেন্দ্র। ইজ়রায়েল সেনার হামলার ‘লক্ষ্য’ সেগুলি ছিল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গত শনিবার ইরান ফৌজ ৩০০টিরও বেশি ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল ইজ়রায়েলে। তার পরেই প্রত্যাঘাতের বার্তা দিয়েছিলেন ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। ব্রিটেনের বিদেশমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনও জানিয়েছিলেন, ইজ়রায়েল প্রত্যাঘাত করবেই।
অন্য দিকে, ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসি পাল্টা দাবি করেছিলেন— ইজ়রায়েল হামলা করলে তার প্রত্যাঘাত হবে অত্যন্ত ভয়ানক। যদিও আমেরিকা, রাশিয়া-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ইজ়রায়েলকে হামলা না করার অনুরোধই করে আসছে বরাবর। আলোচনার মাধ্যমে সংঘাত মিটিয়ে নেওয়ার কথা বলেছে। কিন্তু তেল আভিভের এই প্রত্যাঘাতের জেরে পশ্চিম এশিয়ায় আবার যুদ্ধের মেঘ ঘনিয়ে আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার (১৩ এপ্রিল) মধ্যরাতে ইজ়রায়েলে প্রায় ২০০টি ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান সেনা। যদিও আমেরিকা এবং জর্ডনের মতো দেশের সহায়তায় শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থার সাহায্যে প্রায় ৯৯ শতাংশ ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্রকে প্রতিহত করে ইজ়রায়েল। ফলে বিশেষ ক্ষয়ক্ষতির ঘটেনি। তার আগে গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাসে ইরানি দূতাবাসে ক্ষেপণাস্ত্র বিমানহানা চালিয়েছিল ইজরায়েল। তাতে নিহত হয়েছিলেন ইরানের কয়েক জন কূটনীতিক এবং সামরিক প্রতিনিধি। তারই ‘জবাব’ দিতে ১৩ এপ্রিল রাতে হামলা চালানো হয় বলে তেহরানের দাবি।