শঙ্কর বালসুব্রমনিয়ন
জিনের রহস্য বিজ্ঞানের অন্যতম জটিল একটি বিষয়। সেই জটিল রহস্যকেই দ্রুত গতিতে বিশ্লেষণের (জিনোম সিকোয়েন্স) স্বীকৃতি হিসেবে ব্রেকথ্রু পুরস্কার পেলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত রসায়নবিদ শঙ্কর বালসুব্রমনিয়ন। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক অবশ্য এই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিক পুরস্কার পেয়েছেন। ব্রিটেনের রানির কাছ থেকে ২০১৭ সালে ‘নাইটহুড’ পাওয়ায় নামের আগে জুড়েছে স্যর-ও। তবে নোবেল যদি বিজ্ঞান সাধনার সর্বোচ্চ স্বীকৃতি হয় তা হলে ব্রেকথ্রু পুরস্কার তার থেকে খুব বেশি পিছিয়ে থাকবে না। তবে অর্থমূল্যের নিরিখে এই পুরস্কার অবশ্য নোবেলের থেকেও দামি। প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে এই পুরস্কার পেয়েছেন ভারতীয় পদার্থবিদ অধ্যাপক অশোক সেন।
আদতে চেন্নাইয়ে জন্ম হলেও শঙ্করের আশৈশব কেটেছে ব্রিটেনেই। কেমব্রিজ থেকে স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডির পাঠ শেষ করে পাড়ি দেন আমেরিকায়। সে দেশের পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করার পর ব্রিটেনে ফিরে ১৯৯১ সালে কেমব্রিজেই শিক্ষকতা শুরু করেন। শিক্ষকতা এবং গবেষণার একের পর এক ধাপ পেরিয়ে কেমব্রিজের রসায়ন বিভাগের অধিকর্তা হয়েছেন। বস্তুত, শঙ্করের গবেষণা আসলে কেমব্রিজেরই ফসল। তাঁর সঙ্গে যৌথ ভাবে পুরস্কার পেয়েছেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক বিজ্ঞানী স্যর ডেভিড ক্লেনারম্যান।
বিজ্ঞানী মহলে নিউক্লিক অ্যাসিড সংক্রান্ত গবেষণায় শঙ্কর এক জন পথিকৃৎ হিসেবেই স্বীকৃত। ২০১২ সালে রয়্যাল সোসাইটির ফেলো হওয়ার পিছনেও নিউক্লিক অ্যাসিডের গবেষণাই ছিল অন্যতম প্রধান হাতিয়ার। তাঁর এই গবেষণার কথা রয়্যাল সোসাইটিও স্বীকার করে নিয়েছে। ব্রেকথ্রু পুরস্কার কমিটিও শঙ্করের গবেষণার প্রশংসায় কার্যত পঞ্চমুখ।
বস্তুত, দ্রুত গতিতে রহস্য ভেদই শঙ্করের এই পুরস্কার প্রাপ্তির বড় কারণ। পুরস্কার কমিটি জানিয়েছে, জিনের রহস্য ভেদ করার গতি বহু গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে শঙ্করের গবেষণা। যে রহস্য ভেদ করতে ১০ বছর ও কয়েক লক্ষ ডলার প্রয়োজন হত, শঙ্কর তা এক ঘণ্টায় করার পথ বাতলেছেন। এতে খরচ পড়বে এক হাজার ডলার। জিন সংক্রান্ত গবেষণায় যা তেমন বড় মাপের খরচই নয়।