এক জখম গ্রামবাসীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য তোলা হচ্ছে গাড়িতে। শুক্রবার নেপাল সীমান্তে, বিহারের সীতামঢ়ীর কাছে। ছবি: পিটিআই
নেপালের সঙ্গে সীমান্ত-বিবাদ, দু’দেশের নেতা-মন্ত্রীদের উস্কানিমুলক মন্তব্য থেকে তৈরি উত্তেজনা এ বার প্রাণঘাতী হয়ে উঠল। বিহারের সীতামঢ়ীর অদূরে নেপালের ভূখণ্ডে এক দল ভারতীয় নাগরিকের সঙ্গে সে দেশের সশস্ত্র পুলিশের বচসা রীতিমতো সংঘর্ষের রূপ নিল। পুলিশের গুলিতে মারা গেলেন এক ভারতীয়, জখম দুই।
ভারত ও নেপালের মধ্যে সীমান্তে অবাধ যাতায়াতের সুবিধা রয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক করোনাভাইরাস সংক্রমণের আবহে সীমান্ত অতিক্রমে কড়াকড়ি করছে নেপাল। সীমান্ত এলাকায় দু’দেশের পরিবারগুলির মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্কের চল রয়েছে। আবার অনেক ভারতীয় নাগরিক নেপালের তরাই অঞ্চলে বসবাসও করেন। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী এসএসবি (সীমা সুরক্ষা বল) ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সীমান্তে কড়াকড়ির মধ্যেই লগন যাদব (৪৫) নামে এক ভারতীয় শুক্রবার সকালে কয়েক জন সঙ্গীকে নিয়ে নেপালের মধ্যে একটি গ্রামে পৌঁছে পুত্রবধুর সঙ্গে দেখা করে কথা বলছিলেন।
সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী তাতে আপত্তি করলে বচসা বাধে। নেপালি পুলিশের দাবি, প্রায় ১০০ মারমুখী ভারতীয় বাসিন্দা পুলিশকে ঘিরে ধরে, অস্ত্র কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশ প্রথমে শূন্যে গুলি চালিয়ে সতর্ক করলেও কাজ হয়নি. এর পরে গুলি চালায়। বিকাশ যাদব (২২) নামে এক ভারতীয় মারা যান। অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে লগনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দুই আহতকে সীতামঢ়ীতে নিয়ে এসে চিকিৎসা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে বলে জানিয়েছে এসএসবি।
আরও পড়ুন: এখন দ্বিতীয় ঢেউয়ের ভয় আমেরিকায়
আরও পড়ুন: ‘মানচিত্র বদলাব না’, ভারতের আপত্তি উড়িয়ে ফের জানিয়ে দিল নেপাল
তবে ভারত সীমান্তের মানচিত্র নিয়ে নেপাল যে পিছু হটছে না, এ দিন সে দেশের বিদেশমন্ত্রী প্রদীপ গিয়াওয়ালি ফের তা জানিয়েছেন। দেশের নতুন মানচিত্রে লিপুলেখ ও লিম্পিয়াধুরা গিরিপথ এবং কালাপানি অঞ্চলকে নেপালের অংশ হিসাবে দেখানো হয়েছে। নতুন মানচিত্র গ্রহণের জন্য সংসদে প্রস্তাব এনে সংবিধান সংশোধন করতে চলেছে নেপাল সরকার। সে কাজে বিরোধীরাও সরকারের পাশে। সীমান্ত-বিরোধ মেটাতে নেপাল আলোচনার প্রস্তাব দিলেও দিল্লি তা গ্রহণ করেনি। গিয়াওয়ালি জানিয়েছেন, নতুন মানচিত্রই চূড়ান্ত ও চিরস্থায়ী বলে মানবে কাঠমান্ডু। চিনের সঙ্গে সীমান্ত-বৈঠক করতে পারলে দিল্লি নেপালের সঙ্গে কেন বসবে না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।