চলছে শুনানি।—ছবি রয়টার্স।
মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ইমপিচ করা হবে কিনা, তা নিয়ে প্রকাশ্যে শুনানির প্রথম সপ্তাহটা চাপের উপরেই থাকতে হল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। হাউস অব রিপ্রেজ়েন্টেটিভসের তদন্ত কমিটি বিদেশ দফতরের বেশ কয়েক জন আধিকারিকের সাক্ষ্য শুনেছে। যাঁরা বলেছেন, ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠ রুডি জুলিয়ানির নেতৃত্বাধীন নীতি নির্ধারণকারী ‘গোপন’ একটি গোষ্ঠীর ছত্রছায়ায় কাজ করতে গিয়ে কী পরিমাণ অসুবিধের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁদের। তাঁদের দাবি, ওই গোষ্ঠী গুরুত্বপূর্ণ বিদেশি অনুদানের বিনিময়ে নির্বাচনী-প্রচারে সাহায্যের আশ্বাস আদায় করেছিল।
ইউক্রেনের প্রাক্তন দূত মেরি ইয়োভানোভিচের সাক্ষ্য দিয়ে শুনানি-সপ্তাহ শেষ হয়েছে। ইয়োভানোভিচ জানিয়েছেন, সেই ‘ভয়ঙ্কর প্রচার-পর্বের’ জেরে তাঁকে নিজের কাজটাই খোয়াতে হয়েছে। তিনি যখন সাক্ষ্য দিচ্ছিলেন, তখন লাইভ টুইটে তাঁকে আক্রমণ করে গিয়েছেন ট্রাম্প।
ইউক্রেনে শীর্ষ স্তরের মার্কিন কূটনীতিক উইলিয়াম টেলর গোপনে সাক্ষ্য দিয়েছেন। পরে জানা গিয়েছে, উইলিয়াম সাক্ষ্যের শুরুতেই বলেছেন, জো বাইডেনের ছেলে হান্টারের বিরুদ্ধে তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে মার্কিন দূত গর্ডন সন্ডল্যান্ডের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ফোনে জোরে জোরে কথা বলতে শুনেছেন তিনি।
এ বার প্রেসিডেন্টকে আদৌ ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে কি না, তা সময়ই বলবে। তবে বিশেষজ্ঞেরা একটা বিষয়ে একমত। সেটি হল ট্রাম্প নিজেই তাঁর টুইট এবং প্রকাশ্য বিবৃতি দিয়ে ডেমোক্র্যাটদের লড়াইয়ের পথটা মসৃণ করে দিচ্ছেন! শুনানি-সপ্তাহ শেষের পরে তাই হাউসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি-সহ ডেমোক্র্যাট নেতারা ঘনিষ্ঠ মহলে বলছেন, এই মুহূর্তে জয় হয়েছে তাঁদেরই। কারণ, তদন্ত-শুনানি টিভিতে দেখিয়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করা গিয়েছে। মানুষকে বোঝানো গিয়েছে, প্রেসিডেন্ট কী ভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। এর পরে প্রেসিডেন্টকে ইমপিচ না করা হলেও সামনের বছরের নির্বাচনে এর সুফল মিলবে বলে মনে করছেন ডেমোক্র্যাটরা। এ ভাবে যদি শুনানি চলতে থাকে তা হলে সেটা রিপাবলিকানদের পক্ষে খুবই বিপজ্জনক হবে। সে ক্ষেত্রে ট্রাম্প হবেন প্রথম প্রেসিডেন্ট যিনি ইমপিচমেন্টের মুখোমুখি হয়েও পুনর্নির্বাচনের জন্য লড়াইয়ে নামবেন।