গাজ়ার অসুস্থ বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে নিরাপদ জায়গায়। ছবি: সংগৃহীত।
জলই ‘জীবন’। অথচ এই জীবন রক্ষা করার জন্যই কঠিন লড়াই করতে হচ্ছে গাজ়ার বাসিন্দাদের। শৌচাগারে যেতে হলে দাঁড়াতে হচ্ছে লম্বা লাইনে। স্নান করলে ফুরিয়ে যাচ্ছে খাওয়ার জন্য বরাদ্দ জলই। হামাস-ইজ়রায়েল চলতি সংঘাতের আবহে গাজ়ায় জল, বিদ্যুৎ এবং টেলিসংযোগ দেওয়া পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে ইজ়রায়েলি প্রশাসন। গাজ়ায় খাদ্য আমদানির পথও পুরোপুরি বন্ধ। এই অবস্থায় ঘন জনবসতিপূর্ণ গাজ়া ভূখণ্ডে জলের জন্য হাহাকার শুরু হয়েছে।
রবিবার আরও এক বার গাজ়া ভূখণ্ডের তুলনামূলক নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার জন্য সেখানকার বাসিন্দাদের অনুরোধ জানায় ইজ়রায়েলের সেনা। কার্যত গাজ়াবাসীকে প্রাণ হাতে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার জন্য সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। রবিবার বিকেল সাড়ে ৩টেয় সেই সীমা শেষ হয়েছে। এই সময়সীমা পেরোনোর পরেই তারা গাজ়া ভূখণ্ডে সর্বাত্মক হামলা চালাতে চলেছে বলে জানিয়েছিল ইজ়রায়েলি সেনা। তাই এর পরের পরিণতি নিয়ে আশঙ্কিত নানা মহল। রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যেই গাজ়ার দশ লক্ষ বাসিন্দা ভূখণ্ডের উত্তরাংশ থেকে তুলনায় নিরাপদ দক্ষিণ দিকে সরে গিয়েছেন।
প্রাণ হাতে নিয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে গাজ়ার দক্ষিণ দিকের শহরে চলে যাচ্ছেন বছর তেতাল্লিশের আহমেদ হামিদ। সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে তিনি বলেন, “দিনের বেলা আমরা স্নান করতে পারছি না। এমনকি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে হলেও আমাদের লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে।” গাজ়ার আর এক বাসিন্দা জানান যে, সেখানে নিত্যপ্রয়োজনীয় কোনও খাবার পাওয়া যাচ্ছে না। যা-ও বা কিছু পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলির দাম আকাশছোঁয়া।
গাজ়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস ঢোকা বন্ধ করতে ইজ়রায়েলি প্রশাসনের পদক্ষেপের নিন্দা করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। তবে হামাসকে হাতে এবং ভাতে মারতে গাজ়ায় অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অবিচল ইজ়রায়েল। এই আবহেই গাজ়ায় হামলা চালানোর ইজ়রায়েলি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন স্বয়ং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।