ছবি: রয়টার্স।
দু’দিন আগেই তাঁদের অন্যতম দাবি মেনে নিয়েছেন প্রশাসক ক্যারি ল্যাম। গত বুধবার বিতর্কিত প্রত্যর্পণ বিল প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেছিলেন তিনি। কিন্তু তাতে একেবারেই সন্তুষ্ট নন হংকংয়ের গণতন্ত্রকামী বিক্ষোভকারীরা। আগামী কাল থেকে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন তাঁরা।
বিল প্রত্যাহারের পাশাপাশি আরও বেশ কয়েক দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন চলছে হংকংয়ে। সেগুলি সব ক’টা মেনে নেওয়া না হলে হংকংয়ের পথে প্রতিবাদ চলবেই বলে জানিয়েছেন গণতন্ত্রকামী নেতারা। বাকি দাবিগুলির মধ্যে রয়েছে বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশি অভিযানের নিরপেক্ষ তদন্ত, এ পর্যন্ত আটক হওয়া প্রায় এক হাজার বিক্ষোভকারীর অবিলম্বে মুক্তি এবং স্বাধীন ভাবে নেতা বাছার অধিকার। শেষের দাবিটি যে চিনের আধিপত্য থেকে স্বায়ত্তশাসিত এই অঞ্চলের মুক্ত হওয়ার প্রয়াস, তা নিয়ে সন্দেহ নেই। অথচ বিল প্রত্যাহার নিয়ে ঘোষণার দিন এই দাবিগুলি নিয়ে একটা শব্দও খরচ করেননি বেজিং অনুগত বলে পরিচিত ল্যাম। যা নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে।
আজ তাই আন্দোলনকারীদের তরফ থেকে সাফ জানানো হয়েছে, কাল থেকে ফের অচল করা হবে শহরের প্রাণকেন্দ্র। সেই সঙ্গে বিমানবন্দর যাওয়ার সব রাস্তা বন্ধ করার হুমকিও দিয়ে রেখেছেন তাঁরা। আজ হংকংয়ের একটি প্রথম সারির দৈনিকে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। সেখানে বলা হয়েছে, সারা সপ্তাহ প্রচুর মানুষ বিশ্বের নানা দেশের উড়ান ধরতে বিমানবন্দরে যান। এ ভাবে রাস্তা আটকে রাখলে তাঁরা সকলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কিন্তু আন্দোলনকারীরা সেই আর্জিতে নরম হওয়ার আশ্বাস দেননি।
আজ আবার হংকংয়ের গণতন্ত্রকামী বিক্ষোভকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল। তিন দিনের বাণিজ্য সফরে গত কাল চিনে পৌঁছেছেন আঙ্গেলা। সেখানেই এক সাংবাদিক বৈঠকে আঙ্গেলা বলেছেন, হংকংয়ের মানুষের প্রাপ্য স্বাধীনতা নিশ্চিত করা উচিত। বেজিংয়ে চিনা প্রধানমন্ত্রী লি খ্যছিয়াংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন আঙ্গেলা। তার পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘‘আলোচনার মাধ্যমেই সব সমস্যার সমাধান বার হয়। অশান্তি এড়াতে যা দরকার হয় করুন।’’ আঙ্গেলার সাংবাদিক বৈঠকে আজ কড়াকড়ি ছিল চোখে পড়ার মতো। পশ্চিমী বহু সংবাদ সংস্থার প্রতিনিধিরাই আঙ্গেলার সঙ্গে কথা বলতে পারেননি। তবে তাঁর বার্তা যে চিনের প্রতি ছিল, তা স্পষ্ট। আঙ্গেলার চিন সফরের আগে হংকংয়ের গণতন্ত্রকামী নেতাদের একাংশ জার্মান চ্যান্সেলরকে তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ করেছিলেন। চিনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিতে যাওয়ার আগে তাঁকে সাবধানও করেন হংকংয়ের নেতারা। তাঁধের বক্তব্য, এর আগে বহু বার আন্তর্জাতিক নিয়মের তোয়াক্কা না করে অনেক বড় বড় বাণিজ্যিক প্রতিশ্রুতি ভেঙেছে বেজিং।