রাষ্ট্রপ্রধানরা যখন অন্য দেশে যান, তখন প্রথমেই মাথায় রাখতে হয় তাঁদের সুরক্ষার বিষয়টা। তাই যে কোনও বিমানে উঠে বিদেশ সফরে যেতে পারেন না তাঁরা। তাঁদের জন্য প্রস্তুত থাকে বিশেষ বিমান। নিজের এয়ারফোর্স ওয়ান-এ ভারত সফরে এসেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাকি রাষ্ট্রপ্রধানদেরও রয়েছে বিশেষ বিমান। কেমন সে সব বিমান? দেখে নেওয়া যাক বিশ্বের প্রথম ১০ প্রেসিডেন্টিয়াল এয়ারক্র্যাফ্ট।
ডুমসডে প্লেন: এয়ারফোর্স ওয়ানের কথা অনেকেই শুনেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের জন্য বিশেষ ভাবে নির্মিত বিমান। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিশ্বের যে কোনও জায়গায় যাওয়ার জন্য আরও একটি বিমান ব্যবহার করেন, তা অনেকেই জানেন না।
ডুমসডে প্লেন। পরিবর্তিত বোয়িং ৭৪৭ বিমান। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্টকে সম্পূর্ণ সুরক্ষা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত এই বিমান। এর সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯৯৭ কিমি। বানাতে খরচ হয়েছে ২২ কোটি ডলার।
এয়ারবাস এ৩৩০-২৪৩ প্রেস্টিজ: কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্টের বিমান। এই বিমান বানাতে খরচ পড়েছে আনুমানিক ২৫ কোটি ডলার। একসঙ্গে ৫০ জনের বসার জায়গা আছে এই বিমানে। সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় এক হাজার কিলোমিটার।
বোয়িং ৭৬৭-২০০ইআর: সব মিলিয়ে মোট ৪০ জনের বসার ব্যবস্থা রয়েছে এই বিমানে। জিম্বাবোয়ের প্রেসিডেন্টের জন্য নির্মিত এই বিমান বানাতে খরচ হয়েছে আনুমানিক ২৫ কোটি ডলার। জিম্বাবোয়ে আফ্রিকার প্রথম ১০ ধনী দেশের তালিকাতেও নেই। অথচ সেই দেশের প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত বিমানের জন্য এই বিশাল অঙ্কের টাকা খরচ করায় বিতর্কও হয়েছিল।
বোয়িং ৭৪৭-৪০০: চিনের প্রেসিডেন্ট এই বিমানই ব্যবহার করে থাকেন। তবে এখানে একটা টুইস্ট আছে। দেশের অর্থনীতির উন্নতির জন্য, প্রেসিডেন্টের সুরক্ষার জন্য ব্যবহৃত বিমানেই চলাফেরা করতে পারেন সাধারণ মানুষও। কারণ প্রতিবার প্রেসিডেন্টের যাত্রা শেষ হলেই বিমানটা পুনরায় চলে যায় চিনের রেগুলার এয়ারলাইনের জিম্মায়।
চিনের প্রেসিডেন্টের জন্য বোয়িং ৪৭৪-৪০০ বিমান বানাতে খরচ হয়েছে আনুমানিক ২৫ কোটি ডলার। এর সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯৮২ কিলোমিটার। ৪১৬ জন যাত্রী বসার ব্যবস্থা আছে বিমানে।
এয়ারবাস এ৩৩০: একেবারেই বাণিজ্যিক বিমান। শুধু ভিআইপি জোনেই যা বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বিদেশ সফর এই বিমানেই করে থাকেন। এই বিমানের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬৬৭ কিলোমিটার। একসঙ্গে ১৫৮ জন যাত্রী বহন করার ক্ষমতা আছে এই বিমানের।
এয়ারবাস এ৩৩০-২০০: ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের বিমান। বানাতে খরচ হয়েছে আনুমানিক ২৭ কোটি ডলার। সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯১৩ কিলোমিটার এবং যাত্রী নেওয়ার ক্ষমতা ২৫৩ জন। বিমানেই প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত রান্নাঘর, বেডরুম আছে।
এয়ারবাস এ৩৪০-৩১৩এক্স ভিআইপি: মার্কিন প্রেসিডেন্টের এয়ারফোর্স ওয়ানের মতো জার্মানির এই বিমানেরও আলাদা নাম আছে। কনরাড অ্যাডেনর। এই বিমান বানাতে খরচ হয়েছে আনুমানিক ৩০ কোটি ডলার। সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯১২ কিলোমিটার।
এই বিমানে জ্বালানীর অতিরিক্ত ট্যাঙ্ক আছে। প্রয়োজনে উড়ন্ত হাসপাতালে পরিণত হতে পারে এই বিমান। এ ছাড়া জার্মান চ্যান্সেলরের বিলাসিতা এবং সুরক্ষার সমস্ত ব্যবস্থাই আছে।
আইএল-৯৬-৩০০পিইউ: শক্তিশালী নেতার শক্তিশালী বিমানেরও প্রয়োজন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের জন্য তাই এই বিমান। হাই টেক সুরক্ষা এবং বিলাসবহুল অন্দরমহলের জন্য বিমান বানাতে খরচ হয়েছে আনুমানিক ৫০ কোটি ডলার। গতিবেগ সর্বোচ্চ ৯০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা।
বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার: মেক্সিকোর প্রেসিডেন্টের জন্য বিশেষ বিমান। যা নির্দ্বিধায় ক্রমাগত ১৬ হাজার কিলোমিটার উড়তে পারে। সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯৫৪ কিলোমিটার এবং বানাতে খরচ হয়েছে আনুমানিক ৬০ কোটি ডলার।
এয়ারফোর্স ওয়ান: বিশ্বের সবচেয়ে দামি এবং সুরক্ষিত মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিমান। এই বিমানেই ভারতে উড়ে এসেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মাঝ আকাশেই জ্বালানি ভরার ব্যবস্থা আছে বিমানে। সর্বোচ্চ গতিবেগ এক হাজার কিলোমিটার এবং বানাতে খরচ হয়েছে আনুমানিক ৩৯০ কোটি ডলার।