ঢাকায় সরকারি অতিথি ভবন ‘যমুনা’য় থাকবেন ইউনূস। —ফাইল চিত্র।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়ার পর প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ‘গণভবন’ তাণ্ডবের সাক্ষী থেকেছে। উল্লাস, ভাঙচুর, লুটপাট— সবই চলেছে গণভবনে। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’য় প্রকাশ, গণভবনের এখন যা পরিস্থিতি তাতে সেটি আর এই মুহূর্তে বাসযোগ্য অবস্থায় নেই। সূত্রের খবর, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর মুহাম্মদ ইউনূসের থাকার বন্দোবস্ত করা হচ্ছে ‘যমুনা’ ভবনে। দায়িত্ব গ্রহণের পর ঢাকার রমনা থানা এলাকায় মিন্টো রোডের ধারে এই ভবনটিই হবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ও কার্যালয়।
যমুনা ভবনটি হল আসলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন। অতীতে যখনই প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের প্রয়োজন হয়েছিল, তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল এখানেই। ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন প্রাক্তন বিচারপতি হাবিবুর রহমান। সেই সময় তাঁর থাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল যমুনাতে। এর পর ২০০১ সালেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা লতিফুর রহমান ছিলেন যমুনায়। ২০০৮ সালে যখন সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল, তখনও প্রধান উপদেষ্টা ফকরুদ্দিন আহমেদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল যমুনাতে। বাংলাদেশের সরকারি আবাসন দফতরের ডিরেক্টর মহম্মদ শহীদুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন, এ বারও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন হিসাবে ‘যমুনা’-কে বেছে নেওয়া হয়েছে।
শুধু অতীতের প্রধান উপদেষ্টারা নন, বাংলাদেশের সদ্যপ্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এক কালে থেকেছেন যমুনাতে। ২০০৯ সালে যখন গণভবনে সংস্কারের কাজ চলছিল, তখন সাময়িক ভাবে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন স্থানান্তরিত হয় যমুনায়।
তবে মাঝে দীর্ঘ দিন এই যমুনা ভবন বাংলাদেশের কোনও রাষ্ট্রপ্রধানের বাসভবন হিসাবে ব্যবহৃত হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা কোথায় থাকবেন, সে বিষয়টি চূড়ান্ত হতেই যমুনাকে নতুন করে সাজানোর কাজ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই দ্বিতল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেছেন কর্মীরা। ভবনের সামনে রয়েছে সবুজ ঘাসের সুন্দর গালিচা। সেই গালিচার বুক চিরে পিচের মসৃণ রাস্তা চলে গিয়েছে ভবনের গাড়ি বারান্দা পর্যন্ত। আর চার পাশে রয়েছে প্রচুর ছোট বড় গাছ। ঘাসের গালিচাকে বৃহস্পতিবার সুন্দর ভাবে পরিষ্কার করা হয়েছে। ঘাস ছাঁটা হয়েছে। পরিষ্কার করা হয়েছে জংলি ঝোপঝাড়। ভবনের মূল ফটককে ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করা হয়েছে। নিয়ে আসা হয়েছে নতুন চেয়ার-টেবিল ও অন্যান্য আসবাব।
বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে যমুনা ভবনের সামনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জওয়ান ও অন্যান্য বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। তবে মুহাম্মদ ইউনূস কবে যমুনা ভবনে উঠবেন, সে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়।