Rare Disease

Rare Condition: ৫ মাসের এই মেয়ে ‘পাথর’ হয়ে যাচ্ছে ব্রিটেনে, একটু একটু করে, চিকিৎসকরা অসহায়

মেয়ের হাতে বুড়ো আঙুল নড়ছে না, পায়ের আঙুল তুলনামূলক বড় দেখে সন্দেহ হয় লেক্সির বাবা-মায়ের। ডাক্তারের কাছে যেতেই জানা যায় বিরল রোগে আক্রান্ত মেয়ে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লন্ডন শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২১ ১৩:৪৮
Share:

ছোট্ট শরীরে বিরল রোগ লেক্সির। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।

দূর থেকে দেখলে চিনামাটির পুতুল মনে হতে বাধ্য। নরম চাহনি, তুলতুলে গালের সেই একরত্তি শিশু বাস্তবেও সত্যি সত্যি পাথর হওয়ার পথে। চিকিৎসকরা হাত তুলে নিয়েছেন ইতিমধ্যেই। রক্তমাংসের শিশু হিসেবে মায়ের কোলে জন্ম নিলেও, যত দিন জীবিত থাকবে, পাথর হয়েই তাকে কাটাতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।

Advertisement

অতিমারির মধ্যেই এ বছর ৩১ জানুয়ারি ব্রিটেেনে জন্ম লেক্সি রবিন্‌সের। করোনায় যখন চারিদিকে মৃত্যুমিছিল, সেই সময় ফুটফুটে শিশুটিকে পেয়ে সংসার ভরে উঠেছিল অ্যালেক্স এবং ডেভ রবিন্‌সের। এমনিতে সারা ক্ষণ হাসিখুশি লেক্সি। কোথাও কোনও সমস্যা চোখে পড়েনি। কিন্তু ধন্দ কাটে কয়েক দিন যেতেই।

অ্যালেক্স এবং ডেভ জানিয়েছেন, সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু তাঁরা লক্ষ্য করেন, মেয়ে হাতের বুড়ো আঙুলটি একেবারেই নাড়াচ্ছে না। পায়ের আঙুলগুলোও যে স্বাভাবিকের থেকে একটু বড়। এ ভাবে কয়েক দিন কাটার পরেও অবস্থার কোনও পরিবর্তন না হওয়ায়, চিকিৎসকের কাছে ছোটেন তাঁরা। প্রথমে কেউই রোগ ধরতে পারেননি। শুধু বলা হয়, তাঁদের মেয়ে হাঁটতে পারবে না। সুস্থ-সবল মেয়েকে দেখে তা বিশ্বাস করতে পারেননি অ্যালেক্স এবং ডেভ। তাই বিশেষজ্ঞকে দেখানোর সিদ্ধান্ত নেন।

Advertisement

মায়ের কোলে লেক্সি। সঙ্গে বাবা ও দাদা। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।

কিন্তু সেখানে যা জানতে পারেন, তাতে স্তম্ভিত হয়ে যান অ্যালেক্স এবং ডেভ। জানতে পারেন তাঁদের মেয়ে ফাইব্রোডিসপ্লেসিয়া ওসিফিকানস প্রগ্রেসিভা (এফওপি) নামের বিরল রোগে আক্রান্ত, যে রোগে, কঙ্কালের কাঠামোর বাইরেও হাড় গজায়। শরীরে পেশিও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হাড়ে পরিণত হয়। যত বয়স বাড়তে থাকে ততই হাড়ের আধিক্য বাড়তে থাকে শরীরে। যে কারণে একটা সময় শরীর কার্যত পাথরে পরিণত হয়।

চিকিৎসকরা জানান, লেক্সির পায়ের পাতা থেকে আঙুল পর্যন্ত হাড়ের সন্ধিস্থলগুলি ফুলে রয়েছে। হাতের বুড়ো আঙুলে দু’টি করে সন্ধিস্থল রয়েছে। সেই কারণেই আঙুল নাড়াতে পারছে না সে। চিকিৎসকরা আরও জানান, কানের হাড় বাড়তে বাড়তে তার বধির হয়ে যাওয়ার সম্ভানাও ৫০ শাতংশ। দাঁতের চিকিৎসা করাতে পারবে না লেক্সি। তাকে কোনওরকম ইঞ্জেকশনও দেওয়া যাবে না।

লেক্সির বাবা জেভ বলেন, ‘‘যে চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলাম, তিনি বলেন ৩০ বছরের কর্মজীবনে আগে এমন কোনও রোগী দেখেননি তিনি। এটি অত্যন্ত বিরল রোগ।’’ গোটা পৃথিবীতে লেক্সির মতো অসুস্থতার পাওয়া গিয়েছে মাত্র ২০ লক্ষের শরীরে। এই রোগের আক্রান্ত হলে ২০ বছর বয়সেই শয্যাশায়ী হয়ে যান রোগীরা। সর্বোচ্চ আয়ুকাল হয় ৪০ বছরের আশেপাশে।

তবে এমন বিরল রোগে আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও, লেক্সি আগের মতোই প্রাণচঞ্চল এবং হাসিখুশি বলে জানিয়েছেন অ্যালেক্স এবং ডেভ। নেটমাধ্যমে এই বিরল রোগ নিয়ে সচেতনতা তৈরি করতে নেমেছে পড়েছেন তাঁরা। চিকিৎসকরা হাত তুলে নিলেও, মেয়ের চিকিৎসার জন্য টাকাও তুলতে শুরু করেছেন তাঁরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement