উত্তপ্ত মায়ানমার। নিজস্ব চিত্র।
মায়ানমারের হ্লাইনথায়া শহরে চিনের অর্থে চলা বেশ কয়েকটি কারখানায় রবিবার আগুন লাগে। এর পরই অন্তত ২২ জন সেনা অভ্যুত্থান প্রতিবাদকারীকে হত্যা করেছে সে দেশের সেনাবাহিনী। রাজনৈতিক বন্দিদের সহযোগী এক সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়েছে, শহরের অন্যত্র আরও ১৬ জন প্রতিবাদকারীকে হত্যা করা হয়েছে। এক জন পুলিশকর্মীরও মৃত্যু হয়েছে। সব মিলিয়ে নির্বাচিত জননেত্রী আন সান সু কি-র বিরুদ্ধে ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের পর, সে দেশে সবচেয়ে রক্তাক্তময় দিন ছিল রবিবার।
কারখানায় আগুন লাগার ঘটনা নিয়ে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে সে দেশের চিনা দূতাবাসের তরফে। সেই বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘অজ্ঞাতপরিচয় কিছু দুষ্কৃতী হ্লাইনথায়ার কাপড়ের কারখানায় আগুন লাগিয়ে দেয়। যার জেরে বেশ কিছু চিনা কর্মী আটকে পড়েন সেখানে। তাই মায়ানমারের কাছে অনুরোধ, সেখানে থাকা চিনা কর্মী এবং সম্পত্তি যেন রক্ষা করা হয়’। যদিও এত জনের মৃত্যুর বিষয়টির উল্লেখ করা হয়নি চিনা দূতাবাসের বিবৃতিতে। কিন্তু চিনা দূতাবাসের ফেসবুক পেজে এই বক্তব্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে মায়ানমারের সাধারণ মানুষ। প্রসঙ্গত, চিনকে মায়ানমারের এই সেনা অভ্যুত্থানের সমর্থক হিসাবেই ধরা হয়।
সে দেশের সেনা পরিচালিত সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, চারটি কাপড়ের কারখানা এবং একটি সার তৈরির কারখানায় আগুন লাগার পর প্রায় দু’হাজার মানুষ দমকল যেতে বাধা দেন। এর পরই নিরাপত্তারক্ষীরা ‘পদক্ষেপ’ করতে বাধ্য হন।
যদিও প্রতিবাদীকারীদের উপর সেনার গুলি চালনার ভয়াবহতা উঠে এসেছে এক চিত্র সাংবাদিকের বক্তব্যে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ওই চিত্র সাংবাদিক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেছে, ‘‘ভয়ঙ্কর লাগছিল। চোখের সামনে দেখছি লোকদের গুলি করে মারা হচ্ছে। এই ভয়াবহ দৃশ্য আমারক স্মৃতি থেকে কোনওদিন মুছবে না।’’ এই হিংসার পরই হ্লাইনথায়া এবং ইয়াঙ্গনের অন্য এলাকায় মার্শিয়ান আইন জারি করা হয়েছে। যদিও আগুন লাগানোর ঘটনার দায় এখনও কোনও গোষ্ঠী নেয়নি। তবে বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার মতে এই মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেশি বলে আশঙ্কাপ্রকাশ করা হয়েছে।