কোনও রকম নোটিস ছাড়াই ট্রাম্পের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। ফাইল চিত্র।
আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাসভবনে আচমকা গোয়েন্দা তল্লাশি ঘিরে রাজনৈতিক তরজা ক্রমেই জমে উঠছে। ট্রাম্পের সমর্থক ও কনজ়ারভেটিভ দলের একাংশের অভিযোগ, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে ওই অভিযান হয়েছে। তদন্তকারী সংস্থা এফবিআই-এর অভিযানকে ‘গৃহযুদ্ধের সূচনা’ বলেও আক্রমণ করেন ট্রাম্পের অনুগামীরা।
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার। সে দিন ফ্লরিডার পাম সৈকতে ট্রাম্পের বিলাসবহুল মার-এ-লাগো রিসর্টে আচমকা হানা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এফবিআই-এর একটি দল। ট্রাম্প সে দিন ঘটনাস্থলে ছিলেন না। নিউ ইয়র্কের বাড়িতে ছিলেন তিনি। কোনও রকম নোটিস ছাড়াই তল্লাশি চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। ক্ষুব্ধ ট্রাম্প বলেন, ‘‘সরকারি তদন্তে সব সময় সহায়তা করেছি। কিন্তু প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন এমন কারও বাড়িতে এ ভাবে নোটিস ছাড়া তল্লাশি চালানোর ঘটনা নজিরবিহীন। বাড়ির সিন্দুকও ভেঙেছে তদন্তকারী অফিসারেরা।’’
২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের লড়াইয়ের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌড়ে শামিল হন, এটা চান না অনেকে। সে কারণেই এই পদক্ষেপ। হোয়াইট হাউস ছাড়ার সময়ে ট্রাম্প ১৫টি বাক্স করে প্রচুর নথিপত্র নিয়ে আসেন বলে অভিযোগ। তার তদন্ত করছে এফবিআই। তার জেরেই কি এই তল্লাশি? এফবিআই জবাব দেয়নি। তদন্তকারীদের একটি সূত্রের দাবি, পরমাণু অস্ত্র সম্পর্কিত কিছু গোপন নথির খোঁজে তল্লাশি চালানো হয়েছিল। জাতীয় নিরাপত্তার জন্য সেগুলি খুবই স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ। তবে আদৌ ওই ধরনের কোনও নথি মিলেছে কি না, তা খোলসা করেনি কেউ। সূত্রের দাবি, ওই তথ্য ভুল হাতে পড়তে পারে সেই আশঙ্কায় তল্লাশি।
কারণ যা-ই হোক না কেন, তল্লাশির জেরে জোর সমালোচনার মুখে পড়েছে এফবিআই। ট্রাম্প এবং কনজ়ারভেটিভ সমর্থকেরা গোয়েন্দা সংস্থাটিকে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’, ‘রাজনৈতিক ভাবে প্রভাবিত’ বলে আক্রমণ করেছেন। রিপাবলিকান সেনেটর টেড ক্রুজ এফবিআই-কে ‘আক্রমণকারী কুকুর’ বলে মন্তব্য করেন। আমেরিকান কংগ্রেসের সদস্য আর এক রিপাবলিকান পল গোসার টুইট করে বলেন, ‘‘এফবিআই ভেঙে দেওয়া উচিত।’
এই পরিস্থিতিতে এফবিআই-য়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন আমেরিকার অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ড। গত কাল তিনি বলেছেন, ট্রাম্পের বাসভবনে তল্লাশি চালানোর অনুমতি তিনি নিজে দিয়েছেন। কী কারণে তল্লাশি চলেছে সেই ব্যাখ্যা না দিলেও গারল্যান্ড জানিয়েছেন, তল্লাশির পিছনে উপযুক্ত কারণ রয়েছে। পাশাপাশি, তিনি বলেন, উদ্ধার হওয়া নথি জনসমক্ষে প্রকাশ করার জন্যে আদালতে আর্জি জানানো হয়েছে। গত কাল এ প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেছেন, ‘‘উদ্ধার হওয়া নথি প্রকাশ্যে আনার বিরোধী নই আমি। বরং চাই, সকলের সামনে সে-সব প্রকাশ করা হোক। তল্লাশিতে কী পাওয়া গেল তা জানানো হোক।’’ কটাক্ষ ও সমালোচনার মুখে পড়ে ক্ষুব্ধ এফবিআইও। সংস্থার তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, সাধারণ মানুষের জন্যে এফবিআই কর্মীরা নিজেদের জীবন বিপন্ন করে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁদের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ, হুমকি কোনও ভাবে মেনে নেওয়া যায় না।