টুইটার দখলের সপ্তাহখানেকেই একের পর এক সিদ্ধান্তে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন ইলন মাস্ক। ছবি: সংগৃহীত।
শীর্ষকর্তাদের চাকরি খেয়ে নেওয়া হোক বা সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করে অফিসে কাজের সময় বাড়ানো। টুইটার দখলের সপ্তাহখানেকেই একের পর এক সিদ্ধান্তে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন ইলন মাস্ক। খানিকটা টুইটের চরিত্রের মতোই— সংক্ষিপ্ত, অথচ ‘কার্যকরী’। যদিও এ হেন সিদ্ধান্তগুলি নিয়ে কম সমালোচিত নন মাস্ক।
৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলার খসিয়ে ‘খাঁচাবন্দি’ টুইট-পাখিকে ‘মুক্ত’ করার কয়েক ঘণ্টায় মধ্যেই বেশ কয়েকটি ‘কড়া’ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মাস্ক। সেগুলি কী কী? এক নজরে সেই ৫ সিদ্ধান্ত—
১) ছাঁটাই সিইও পরাগ আগরওয়াল:
২৭ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার টুইটার দখলের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পরাগকে ছাঁটাই করেছিলেন মাস্ক। নিন্দকদের দাবি, চলতি বছরের গোড়া থেকে পরাগের সঙ্গে ঠোকাঠুকি লেগেই ছিল টেস্লাকর্তার। সে কারণে এপ্রিলে টুইটার কেনার জন্য বিপুল দর হাঁকালেও তা থেকে পিছিয়ে যান মাস্ক। তা ছাড়া, টুইটারের ভুয়ো অ্যাকাউন্টের তথ্য তাঁকে দেওয়া হচ্ছে না বলেও দাবি করেছিলেন। টুইটার দখলের পর পরাগকে সরিয়ে দেন তিনি। চাকরির মেয়াদ ফুরোনোর আগে ছাঁটাই করা হলে চুক্তি অনুযায়ী, সিইও হিসাবে বার্ষিক ১০ লক্ষ ডলার ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি টুইটারের শেয়ার বাবদ সওয়া কোটি ডলার পাওয়ার কথা পরাগের। অনেকের দাবি, তা এড়াতেই ১ নভেম্বরের আগে পরাগকে সরিয়ে দিলেন মাস্ক।
২) টুইটারের আরও ৩ শীর্ষকর্তা বরখাস্ত:
পরাগের পাশাপাশি টুইটারের লিগাল এগ্জ়িকিউটিভ বিজয়া গাড্ডে, চিফ ফিনান্সিয়াল অফিসার নেড সিগাল এবং জেনারেল কাউন্সেল শিন এজ়েটকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মাস্ক। পরাগের মতোই এঁদেরও সরানোর পিছনে ক্ষতিপূরণের অঙ্কই কাজ করছে বলে দাবি।
উদাহরণ হিসাবে সংবাদমাধ্যমের দাবি, শুধুমাত্র গাড্ডেকে ক্ষতিপূরণ দিতেই অন্তত ৪৫০ কোটি খসাতে হত মাস্ককে।
৩) বোর্ড ভেঙে দিয়ে নিজেই টুইটারের ডিরেক্টর:
বাক্-স্বাধীনতার অধিকার নিয়ে সরব মাস্ক কি নিজের সংস্থায় একনায়ক হয়ে উঠেছেন? এমন প্রশ্ন উঠেছে টুইটারের বোর্ড অফ ডিরেক্টরস ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তে। যদিও নতুন বোর্ড গঠনের আগে পর্যন্ত মাস্ক একাই ডিরেক্টরের পদে থাকবেন।
৪) অর্থের বদলে ব্লু-টিক:
টুইটারে ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টের জন্য প্রোফাইলে ব্যবহারকারীর নামের পাশে ব্লু-টিক রাখতে হলে এ বার থেকে গাঁটের কড়ি ফেলতে হবে বলে জানিয়েছেন মাস্ক। গোটা পদ্ধতির খোলনলচে বদল হবে বলে দিয়েছেন তিনি। সূত্রের খবর, টুইটারের ‘ব্লু মেম্বার’ অর্থাৎ যাঁদের সাবস্ক্রিপশন রয়েছে, তাঁদের জন্যই রাখা হবে ‘ব্লু টিক’। এই সাবস্ক্রিপশনের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিতে হয়। সে খরচও বাড়ানো হতে পারে বলে দাবি। সাবস্ক্রিপশনের খরচ বেড়ে হতে পারে ১৯.৯৯ ডলার অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১৬০০ টাকা।
৫) সপ্তাহের ৭ দিনই অফিস, ১২ ঘণ্টা করে কাজ:
শীর্ষকর্তাদের মতোই টুইটারের কয়েক জন ইঞ্জিনিয়ারের কপাল পুড়েছে। তাঁদের জন্য মাস্কের ‘ফতোয়া’— সপ্তাহের প্রতি দিন অফিসে আসতে হবে। সেই সঙ্গে কাজ করতে হবে দিনে ১২ ঘণ্টা। যদিও তার জন্য ওই কর্মীরা যে ওভারটাইম বা অতিরিক্ত অর্থ পাবেন, তেমন আশ্বাস দেওয়া হয়নি।