ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার ফ্লরিডায়। ছবি: রয়টার্স।
খুব বড় অঘটন না ঘটলে আগামী চার বছরের জন্য হোয়াইট হাউসের বাসিন্দা হতে চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজের জয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পর বুধবার ফ্লরিডার পাম বিচে প্রথম বিজয়-ভাষণ দিলেন তিনি। তাঁর বক্তব্যের সিংহভাগ জুড়ে ছিল, আমেরিকাকে জগৎসভায় ফের শ্রেষ্ঠ করে তোলার আশ্বাস। ট্রাম্পের সঙ্গেই মঞ্চে উঠেছিলেন তাঁর স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প এবং পরিবারের অন্য সদস্যেরা। ছিলেন আমেরিকার সম্ভাব্য হবু ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সও।
মঞ্চে উঠেই ‘বিপুল জয়ের’ জন্য আমেরিকাবাসীকে ধন্যবাদ জানান ট্রাম্প। বলেন, “সমালোচকদের ভুল প্রমাণিত করে আমরা জয়ী হতে চলেছি। আমেরিকা অভূতপূর্ব এবং শক্তিশালী রায় দিয়েছে।” তার পরেই ফের ‘আমেরিকাকে আবার শ্রেষ্ঠ করব’ স্লোগানটি দেন ট্রাম্প। ট্রাম্প যখন ভাষণ দিচ্ছেন, তখন তাঁর সমর্থকেরা একনাগাড়ে ‘আমেরিকা-আমেরিকা’ স্লোগান দিতে থাকেন। ট্রাম্প উদ্বেলিত সেই সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, “সব সমস্যার সমাধান করব। আমরা আবার আমেরিকার সোনালি যুগ ফিরিয়ে আনব।”
ভোটপ্রচারে আমেরিকায় অনুপ্রবেশ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। দ্বিতীয় বারের জন্য হোয়াইট হাউসে ঢোকার আগে বুধবার বিজয়-ভাষণের মঞ্চ থেকেও ট্রাম্প বলেন, “আমরা সীমান্ত বন্ধ করব। অনুপ্রবেশ বন্ধ করা হবে।” নিজের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা সম্পর্কে জানিয়ে খানিক আবেগতাড়িত হয়েই ট্রাম্প বলেন, “আমি প্রতিটি দিন আপনার জন্য, আপনার পরিবারের জন্য এবং আপনার ভবিষ্যতের জন্য লড়়াই করব। আমার প্রতিটি নিঃশ্বাসের সঙ্গে আমি আপনাদের হয়ে লড়াই করব।”
নিজের রাজনৈতিক সাফল্যের জন্য পরিবার, বিশেষত স্ত্রী মেলানিয়াকে ধন্যবাদ জানান ট্রাম্প। ট্রাম্পের পরে বক্তব্য রাখতে ওঠেন তাঁর ‘রানিং মেট’, হবু ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্স। তিনি জানান, এই ধরনের রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তন প্রায় বিরল।
আমেরিকার রাজনীতিতে ‘সুইং স্টেট’ বা ‘ব্যাটল গ্রাউন্ড স্টেট’ নামে পরিচিত সাত প্রদেশের ফলাফল নিয়ে কৌতূহলী ছিল গোটা বিশ্ব। কারণ এগুলির ফলের উপরেই নির্ভর করছিল, হোয়াইট হাউসে কে প্রবেশাধিকার পেতে চলেছেন। এই প্রতিবেদন প্রকাশের সময় পর্যন্ত সাতটি প্রদেশেই এগিয়ে রয়েছেন ট্রাম্প। খুব বড় অঘটন না ঘটলে বিকেলের আগেই জাদুসংখ্যা ২৭০টি ইলেক্টোরাল কলেজের ভোট পেয়ে যাবেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ট্রাম্প তাঁর প্রচারের সুর বেঁধেছিলেন ‘আমেরিকা প্রথম’ এবং ‘আমেরিকাকে ফের শ্রেষ্ঠ করে তোলো’— এই দুই স্লোগানের উপর ভর করে। ২০১৬ এবং ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও জাতীয়তাবাদী এই ভাষ্য এবং স্লোগানের উপর ভর করে প্রচার সেরেছিলেন ট্রাম্প। এ বারেও তার ব্যতিক্রম হল না।