নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী ডেসমন্ড টুটু। ফাইল চিত্র।
প্রয়াত হলেন দক্ষিণ আফ্রিকার আর্চবিশপ, নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী ডেসমন্ড টুটু। বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। দীর্ঘদিন ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। রবিবার মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
দক্ষিণ আফ্রিকায় শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদী শাসনের অবসানে টুটুর ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৮৪ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান। ছিলেন নেলসন ম্যান্ডেলার সমসাময়িক। জন্ম ১৯৩১ সালে। ১৯৮৬ সালে কেপটাউনের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ বিশপ। পদমর্যাদা ব্যবহার করে সরব হন কৃষ্ণাঙ্গদের উপরে অত্যাচার নিয়ে। তবে সর্বদা বলেছেন, তাঁর প্রতিবাদ রাজনৈতিক নয়, ধর্মীয় অবস্থান থেকে।
আগেই এক বার যক্ষা থেকে সেরে উঠেছিলেন। ১৯৯৭ সালে ক্যানসারের অস্ত্রোপচার হয় টুটুর। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন অসুস্থতা নিয়ে তাঁকে বেশ কয়েক বার হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছিল। সব সময় দেখা যেত যাজকের বেগুনি পোশাকে। আর মুখে হাসি। ছিলেন দরাজ। ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় বিশ্বকাপ ফুটবলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে নাচতেও দেখা গেয়েছিল টুটুকে।
১৯৯৪ সালে নেলসন ম্যান্ডেলা প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন টুটুকে ‘ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন’ গঠনের দায়িত্ব দেন। উন্মোচিত হয় শ্বেতাঙ্গ শাসকদের অপরাধ। পরে দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার ও স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের ব্যর্থতা নিয়েও দেখা গিয়েছে তাঁর দৃঢ় অবস্থান। সরব হয়েছেন এলজিবিটি মানুষের অধিকার নিয়ে। তবে পরে দুঃখ করেছিলেন, যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, সব কিছু সে ভাবে ঘটেনি বলে।
টুটুর প্রয়াণ ‘দক্ষিণ আফ্রিকাকে স্বাধীনতা এনে দেওয়া অনন্য প্রজন্মের থেকে আরও এক জনকে দেশবাসীর বিদায় জানানোর শোকাতুর অধ্যায়,’ বলে উল্লেখ করেছেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা। টুটুর দেশপ্রেমের পাশাপাশি বিচক্ষণতা ও আদর্শবাদের কথা স্মরণ করেন তিনি।
শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। তিনি বলেছেন, ‘‘আর্চবিশপ টুটু বিশ্বের অসংখ্য মানুষকে আলো দিয়ে পথ চিনিয়েছেন।’’ রাহুল গাঁধী তাঁকে বলেছেন, ‘সবার অনুপ্রেরণা’। দলাই লামা শোকবার্তায় টুটুকে ‘প্রকৃত মানবতাবাদী’ বলে উল্লেখ করেছেন।