কুমিরের চোখে আঘাত করতেই সেটি ছেড়ে দেয় রাজুকে। প্রতীকী ছবি।
প্রচণ্ড গরম পড়েছিল। শ্যাম্পুর প্যাকেটটা নিয়ে বাড়ি থেকে কয়েক হাত দূরে নদীতে স্নান করতে গিয়েছিলেন রাজু হাওলাদার। মাথায় শ্যাম্পু দিয়ে নদীতে নেমে পড়েন স্নান করার জন্য। হঠাৎই ডান উরুতে ভয়ঙ্কর কামড়। তার পরই হ্যাঁচকা একটা টান। তত ক্ষণে তিনি বুঝে গিয়েছিলেন কিসের পাল্লায় পড়েছেন।
মুহূর্তেই সেই টান বাড়তে লাগল, আর ক্রমশ জলের গভীরে চলে যেতে লাগলেন রাজু। ‘প্রথম আলো’-কে তিনি বলেন, “নদী এবং বনের পাশে বড় হয়েছি। বাঘ-কুমিরের গল্প ছোট থেকেই শুনে এসেছি। কী ভাবে ওদের হাত থেকে বাঁচা যায়, সেই গল্পও শুনেছি। কিন্তু নিজে কখনও তাদের খপ্পরে পড়ব ভাবতে পারিনি।”
রাজু আরও বলেন, “বড়দের কাছ থেকেই শোনা যে, কুমিরের শরীরে আঘাত করলে রক্ষা পাওয়া যায় না। একমাত্র কুমিরের চোখে আঘাত করলেই নাকি সেটি শিকার ছেড়ে দেয়।” রাজুর মাথার দিক ছিল কুমিরের লেজের দিকে, আর উরু ছিল কুমিরের চোয়ালের মাঝে আটকে। তত ক্ষণে পাড় থেকে তাঁকে বেশ কয়েক হাত টেনে নিয়ে গিয়েছিল কুমিরটি। নিজের সমস্ত শক্তি দিয়ে শরীরটাকে ঘোরান রাজু। তার পর কুমিরের চোখে আঘাত করেন। আঘাত পেতেই কুমিরের চোয়াল থেকে রাজুর উরু মুক্ত হয়ে যায়। তাঁর কথায়, “কুমিরের মুখ আলগা হতেই নিজেকে ভাসিয়ে তুলি। তার পর জোর হাত-পা চালিয়ে পাড়ে এসে উঠি। চিৎকার করে ডাকতে থাকি বাবা-দাদাকে। তাঁরা ছুটে এসে দেখেন, আমার উরু থেকে রক্ত বেরোচ্ছে।”
তার পরই রাজুকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। ‘প্রথম আলো’-কে রাজু বলেন, “নদীতে বরাবর স্নান করছি। কোনও দিন কুমিরের দেখা পাইনি। কেউ কুমিরের পাল্লায় পড়েছে, এমনও কোনও দিন শুনতে পাইনি। আমার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা মনে করলেই শিউরে উঠছি। বরাতজোরে বেঁচে ফিরেছি।” ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের ঢাংমারীতে।