রাষ্ট্রপুঞ্জ। ছবি: সংগৃহীত।
একে কোভিড অতিমারি, তার উপরে রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ। এই দুইয়ের যৌথ প্রভাব ২০২০ সাল থেকে গোটা বিশ্বের অন্তত ১৬.৫ কোটি মানুষকে দারিদ্রের দিকে ঠেলে দিয়েছে। একটি সাম্প্রতিক রিপোর্টে এ কথা জানিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। ‘ইউনাইটেড নেশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম’ (ইউএনডিপি)-এর ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, অবিলম্বে উন্নয়নশীল দেশগুলির ঘাড় থেকে বিপুল পরিমাণের ঋণের বোঝা না কমালে আরও বেশি করে মানুষ দারিদ্রসীমার নীচে বাস করতে বাধ্য হবেন। এই ১৬.৫ কোটি মানুষ হয় অতিমারিতে কোনও না কোনও ভাবে চাকরি বা কাজ হারিয়েছেন। অথবা রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রভাব পড়েছে এঁদের উপরে।
ইউএনডিপি-র ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, বিশ্বের অন্তত ৭.৫ কোটি মানুষ এখন দিনে গড়ে মাত্র ২.১৫ ডলারে (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১৭৭ টাকা) দিন গুজরান করেন। এঁদের ‘অতি দরিদ্রের’ তালিকায় ফেলেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। এ ছাড়া, আরও অন্তত ৯ কোটি মানুষ এখন দারিদ্রসীমার নীচে বসবাস করছেন। যাঁরা সংসার চালাতে দিনে গড়ে ৩.৬৫ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৩০০ টাকা) খরচ করতে পারেন। ওই রিপোর্টেই জানানো হয়েছে, বিশ্বের অন্তত ৩০০.৩ কোটি মানুষ এখন এমন সব দেশে বসবাস করছেন, যেখানকার সরকার নাগরিকদের স্বাস্থ্য বা শিক্ষা খাতের তুলনায় ঋণ পরিশোধে বেশি অর্থ খরচ করে থাকে। অবিলম্বে তাই ওই সব দেশের ঋণ পরিশোধ প্রক্রিয়া বন্ধ করতে আর্জি জানিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। রিপোর্টে আশঙ্কা করা হয়েছে যে, ২০২৩ সালেও এই পরিস্থিতি শোধরানোর নয়।
চলতি সপ্তাহেই রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস আন্তর্জাতিক আর্থনৈতিক সংগঠনগুলির পরিকাঠামো ঢেলে সাজানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। তাঁর দাবি ছিল, এই সব সংগঠন এখনও ঔপনিবেশিক পরিকাঠামো দ্বারা পরিচালিত। এগুলিতে বদল না আনলে উন্নয়নশীল দেশগুলির মানুষের জীবনে বদল আনাও সম্ভব হবে না।