ছবি এপি।
হিমালয়ের কোলে ছোট্ট নেপালি গ্রাম খামজং। সবাই না চিনলেও এভারেস্টযাত্রীদের কাছে অতিপরিচিত নাম। এখান থেকেই শেরপা, কুলি, গাইড, রাঁধুনিদের সঙ্গে নিয়ে পাহাড়ে চড়া শুরু হয়। করোনা-ত্রাসে বিধ্বস্ত পাহাড়ারতলির সেই ছোট্ট গ্রামটিও। না, এখনও গ্রামের কেউ রোগাক্রান্ত হননি। কিন্তু করোনা থাবা বসিয়েছে গ্রামবাসীদের রুজিরুটিতে। পাহাড় চড়ার মরসুমে আচমকা সব স্তব্ধ হয়ে যাওয়ায় রোজগারের দিশা পাচ্ছেন না গ্রামবাসীরা।
অন্য বছর এপ্রিল পড়তেই শুরু হয়ে যায় পর্বতারোহণের মরসুম। চলে মে মাসের শেষ পর্যন্ত। মোটামুটি এই সময়ে যা আয় হয় তা দিয়েই সারা বছর সংসার চালান গ্রামবাসীরা। এই গ্রামের বেশির ভাগ বাসিন্দা শেরপা। অনেকে অভিযাত্রীদলে মালবাহক, রাঁধুনি হিসেবেও যোগ দেন। কিন্তু এ বছর করোনা-ত্রাস রুখতে ১২ মার্চ থেকে এভারেস্টযাত্রা বন্ধ রেখেছে নেপাল সরকার। এই অবস্থায় প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে আসা অনেকেই খামজংয়ে অভিযাত্রীদের অপেক্ষায় বসে থাকতে থাকতে ফিরে যাচ্ছেন। এমনই এক জন ৩১ বছরের যুবক ফুরবা নামগেল শেরপা। জানালেন, শেরপার কাজ করে এই মরসুমে যা আয় হয় তা তাই দিয়ে সারা বছর সকলের পেট চলে। গত বছরও এ সময়ে ৮৮৫ জন অভিযাত্রী এভারেস্টযাত্রা করেছিলেন। তার মধ্যে ৬৪৪ জন এই খামজং ছুঁয়েই সর্বোচ্চ শিখরের দিকে এগিয়েছেন।
এভারেস্ট বন্ধ হওয়ার ধাক্কা খাচ্ছে নেপালের জাতীয় আয়। এভারেস্ট চড়তে গেলে অভিযাত্রীদের মাথাপিছু ১১ হাজার ডলার খরচ করতে হয়। এ বছর মার্চ থেকে বন্ধ সেই পথও। তবে অসুবিধা হলেও এই নিষেধাজ্ঞা যে জরুরি তা মানছেন দক্ষ পর্বতারোহী ফুরবা তাশি শেরপা। তিনি বললেন, “দেশ-বিদেশ থেকে পর্বতারোহীরা এখানে আসেন। খামজংয়ে একটি মাত্র ছোট্ট হাসপাতাল। পরিকাঠামোও ভাল নয়। করোনায় যেখানে বিশ্বের তাবড় তাবড় উন্নত দেশগুলি বিধ্বস্ত, সেখানে হিমালয়ের এই ছোট্ট গ্রামে রোগ হানা দিলে মড়ক লেগে যাবে।’’