বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে পাঠানো হচ্ছে অক্সিজেন সিলিন্ডার। ছবি: পিটিআই।
করোনা রোগীদের অক্সিজেনের জোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছে পড়শি দেশ। তা থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার ইসলামাবাদের সরকারি হাসপাতালগুলিতে আপাতত পূর্ব নির্ধারিত যাবতীয় অস্ত্রোপচার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল পাকিস্তান সরকার। কোভিড রোগীদের অক্সিজেনের জোগানে যাতে ঘাটতি না পড়ে,তাই সময় থাকতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে ইসলামাবাদ সূত্রে খবর।
ইসলামাবাদের সিডিএ হাসপাতাল, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব রিহ্যাবিলিটেশন মেডিসিন, গভর্নমেন্ট সার্ভিসেস হাসপাতাল, পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস এবং দ্য পলিক্লিনিকের মতো একাধিক প্রথম সারির হাসপাতালে পূর্ব পরিকল্পিত সমস্ত অস্ত্রোপচার বন্ধ রাখা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত তা বন্ধই থাকবে বলে জানানো হয়েছে সরকারের তরফে।
সে দেশের জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম জিয়ো টিভি জানিয়েছে, পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস-এর করোনা বিভাগে এই মুহূর্তে ১৫১ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। জরুরি বিভাগে ভর্তি রয়েছেন ১১ জন রোগী। ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছে ৭ জন রোগীকে। দ্য পলিক্লিনিকে সমস্ত ভেন্টিলেটরেই রোগী রয়েছেন। কোভিড বিভাগে ভর্তি রয়েছেন ২৮ জন। সিডিএ হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ডে ৪২ জন ভর্তি রয়েছেন। তবে আচমকা সংক্রমণ বেড়ে গেলে যাতে কোনও সমস্যা না দেখা দেয়, তার জন্যই জরুরি অস্ত্রোপচার ছাড়া বাকি সব বাতিল করা হয়েছে।
ইসলামাবাদের পাশাপাশি সিন্ধু প্রদেশেও পূর্ব নির্ধারিত সমস্ত অস্ত্রোপচার বাতিল করা হয়েছে। আগাম সতর্কতামূলক ভাবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রদেশ সরকারের মুখপাত্র মোর্তাজা ওয়াহাব। নেটমাধ্যমে তিনি লেখেন, ‘সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালে জরুরি নয় এমন সব অস্ত্রোপচার সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে জরুরি ক্ষেত্রে আগের মতোই অস্ত্রোপচার চলবে’। সকলকে অক্সিজেন বাঁচানোর আর্জিও জানান তিনি।
নোভেল করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় পাকিস্তানেও সংক্রমণ ক্রমশ বেড়েই চলেছে। এখনও পর্যন্ত সেখানে ৮ লক্ষ ১০ হাজার ২৩১ জনের শরীরে কোভিড ধরা পড়েছে। সবমিলিয়ে ১৭ হাজার ৫৩০ জন করোনা রোগী প্রাণ হারিয়েছেন সেখানে। সংক্রমণ এবং মৃত্যু, দুইয়ের নিরিখেই বিশ্বতালিকায় ভারতের চেয়ে অনেক নীচে রয়েছে পাকিস্তান। কিন্তু যে কোনও সময় পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে সে দেশের সরকার। তেমন হলে চিন এবং ইরান থেকে অক্সিজেন আমদানি করতে কথাও সেরে রেখেছে তারা।